“বাংলাদেশের গনতন্ত্র জাতিসংঘে আলোচ্য বিষয় নয়”

Dr AK Abdul Momen talks on DEMOCRACY in Bangladesh -  01মাঈনুল ইসলাম নাসিম : “বাংলাদেশে গনতন্ত্র আছে কি নেই সেটা নিয়ে জাতিসংঘে কখনো আলোচনা হয় না, এগুলো শুধুমাত্র ঢাকার পত্র-পত্রিকাতেই দেখি। মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) গত কয়েক বছরে কে কতটা কেমন করলো, সেই সাথে যুদ্ধবিধ্বস্ত বিভিন্ন দেশে পিসকিপিং মিশন এইসব নিয়েই বেশি কথা হয় জাতিসংঘে”- একান্ত আলাপচারিতায় কথাগুলো বলছিলেন গত ৬ বছর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বপালনকারী রাষ্ট্রদূত প্রফেসর ড. এ কে আবদুল মোমেন। বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষায় সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে মেধাবী এই বাংলাদেশী এখন ঢাকায় ফিরছেন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বা বিশেষ কোন উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে।

বোস্টনের ফ্রেমিংহাম স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন এন্ড ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোমেনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম ‘বাংলাদেশের গনতন্ত্র’ ইস্যুতে। স্পষ্ট করে তিনি জানালেন, “ডেমোক্রেসি কোন দেশে হলো না হলো এসব জাতিসংঘে আলোচ্য বিষয় নয়। ইজিপ্ট-আফগানিস্তান-ইরাক বা লিবিয়ার কী ডেমোক্রেসি আপনারা দেখেছেন ? এমনকি ভিয়েতনামও স্বাধীন হওয়ার পর থেকে গত ৭০ বছর একদলীয় শাসনব্যবস্থার মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলেছে। যে মালয়েশিয়াকে আমরা সবসময় শাবাশ দেই, সেখানেও একই সরকার দেশ চালায়। বিশেষ করে মাহাথির মোহাম্মদ কখনোই বিরোধী দলকে এলাও করেননি তাঁর শাসনামলে”।

রাষ্ট্রদূত প্রফেসর ড. এ কে আবদুল মোমেন আরো বলেন, “সিঙ্গাপুরে বাপ-বেটা একাই দেশ শাসন করেছে বছরের পর বছর। তাই কোথায় গনতন্ত্র আছে আর কোথায় নেই এগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় বা সুযোগ জাতিসংঘের নেই। সবচাইতে বড় বিষয় হচ্ছে জাতিসংঘের নিজের কাছেইতো ডেমোক্রেসি নেই। সিকিউরিটি কাউন্সিলের কথাই চিন্তা করেন, সাড়ে ৭% লোকের প্রতিনিধি তারা, অথচ ওয়ার্ল্ডের ডিসিশন নেয় তারাই। ইউএন-এ দেখেন, ডেমোক্রেসি আছে কোথায় ? আপনার নাউরো’র মতো দেশ, জনসংখ্যা মাত্র ১০ হাজার, ভোট তাদের ১টি, আবার ১.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে ভারতের ভোটও সেই ১টির বেশি নয়”।

ড. মোমেন বলেন, “জাতিসংঘের নিজের অভ্যন্তরেই যেভাবে গনতন্ত্র অনুপস্থিত তার আরো প্রমাণ হচ্ছে সেক্রেটারি জেনারেল ইলেকশান। শুধু পারমানেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভরা ঠিক করেন কে হবেন সেক্রেটারি জেনারেল। তাই ডেমোক্রেসি ইজ অ্যাবসেন্ট ইন ইউএন”। টানা ৬ বছর জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী স্বনামধন্য এই অর্থনীতিবিদ আস্থার সাথে জানালেন, “গনতন্ত্র ইস্যুতে গত ৬ বছর এখানে আমাদের উপর কোন প্রেশার আসেনি। বাংলাদেশের পত্রিকায় হৈচৈ করলে হয়তো এখানে কিছুটা জিজ্ঞেস করে। অবশ্য একথা সত্য যে, রাস্তায় লোক মারা গেলে আমাদের খুব লজ্জা পেতে হয়। তবে দ্য বিউটি ইজ উই কুড প্রোভাইড এ পজিটিভ রোল টু ইট এবং সবক্ষেত্রেই আমাদের গভর্নমেন্ট ইমিডিয়েট অ্যাকশন নিয়েছে”।