গরুর গোশতকে শক্তিবর্ধক বলায় চাকরি গেল সম্পাদকের
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ভারতের হরিয়ানায় বিজেপি শাসিত সরকারের একটি ম্যাগাজিনে গরুর গোশতকে শক্তিবর্ধক উল্লেখ করায় সংশ্লিষ্ট ম্যাগাজিনের সম্পাদককে বরখাস্ত করা হয়েছে। ‘শিক্ষা ভারতী’ নামে ম্যাগাজিনটি হিন্দি এবং ইংরেজিতে প্রকাশ হয়। সোসাইটি অব স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের ম্যাগাজিন ‘শিক্ষা ভারতী’তে প্রাণীজ চারটি শক্তিবর্ধক খাদ্যের মধ্যে বাছুরের পাশাপাশি গরুর গোশত খুবই কার্যকরী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব গোশতে মানুষের শরীরে সরাসরি আয়রনের জোগান দেয় বলেও ম্যাগাজিনটির এক নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়। আর এতেই রেগে আগুন হয়েছে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা সরকার। বৃহস্পতিবার ওই ম্যাগাজিনের সম্পাদক দেবযানী সিংকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে প্রাইমারি এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে ৫২ পাতার ওই ম্যাগাজিনটিকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি, হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার বলেছিলেন, ‘ভারতে থাকতে হলে মুসলিমদের গরুর গোশত খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে।’ তিনিই এই ম্যাগাজিনের প্রকাশনা সংস্থার চিফ প্যাট্রন এবং শিক্ষামন্ত্রী রাম বিলাস শর্মা প্যাট্রন। সংশ্লিষ্ট ওই ম্যাগাজিনটির সম্পাদক অবশ্য সাফাই দিয়ে বলেছেন, প্রতিবেদনটি বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতেই লেখা হয়েছে। যদিও সরকার পক্ষ সম্পাদকের সাফাইকে আমল দেয়নি। শিক্ষামন্ত্রী রাম বিলাস শর্মা বলেন, ‘এ ধরণের একটি প্রতিবেদন হরিয়ানার কোনো পত্রিকায় ছাপানো উচিত হয়নি। আমরা সম্পাদককে সরিয়ে দিয়েছি এবং পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’ চলতি বছরেই হরিয়ানায় গরু জবাই বন্ধে কঠোর আইন পাস করা হয়েছে। এই আইন লঙ্ঘন করলে তিন থেকে দশ বছর পর্যন্ত সাজার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এদিকে, মন্ত্রিসভার এক সিদ্ধান্তে বাতিল হয়েছে সেনাবাহিনীতে এতদিনের মহিষ বলি প্রথা। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশে দশেরা উৎসবে মহিষ বলি দেয়ার গোর্খা প্রথা ‘রঙ্গো’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গোর্খা প্রথা মেনে সেনাবাহিনীর কয়েকটি বিভাগে প্রতি বছর মহিষ বলি দেয়া হতো। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার কংগ্রেস শাসিত কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বেঙ্গালুরুতে যুব কংগ্রেস কর্মীদের এক সভায় বিজেপি এবং আরএসএস-এর নাম না করে বলেন, ‘আমি গরুর গোশত খাই না। এটা আমার ইচ্ছা। যদি আমি আজ থেকে গরুর গোশত খাওয়া শুরু করি সেটাও আমার মর্জিতে হবে। আমি যদি এরকম করি তাহলে আমাকে বাধা দেয়ার কে আছে?’ তিনি বলেন, উন্নয়ন এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে বিতর্ক হওয়ার পরিবর্তে কে গরুর গোশত খায় এবং কে খায় না তা নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত নয়।