এবার সৌদি আরবের বিরুদ্ধে আইএসের যুদ্ধ ঘোষণা

4955_1450479647ডেস্ক রিপোর্টঃ আইএস-বিরোধী লড়াইয়ের জন্য ৩৪টি মুসলিম দেশকে নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোট গঠন করেছে সৌদি আরব। এ জোট গঠনের ঘোষণা দেওয়ায় সৌদি আরবের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট)। সিরিয়ায় তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে মুখোমুখি হতে জঙ্গি সংগঠনটি এক ভিডিও বার্তায় সৌদি আরবকে আহ্বান জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ দৈনিক মিরর এই খবর দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নানামুখী আলোচনা অব্যাহত আছে। সৌদি আরব ঠিকমতো হিসাব-নিকাশ না করেই এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকেরা।
জোটে বিভিন্ন দেশের উপস্থিতি নিয়ে অস্পষ্টতা গতকাল শুক্রবারও অব্যাহত ছিল। জোটে নাইজেরিয়ার নাম থাকলেও এ ব্যাপারে দেশটি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছে। নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদু বুহারির মুখপাত্র গারাবু শেহুর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার এ তথ্য জানায়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলারসের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যারন ডেভিড মিলার প্রশ্ন তুলেছেন, মুসলিম ও আরব দেশগুলো তাদের সংক্ষুব্ধ, ভঙ্গুর ও অকার্যকর অঞ্চলের কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত উপায়ে অভিন্ন অবস্থান কি কখনো নিয়েছে? এমন নজির তো নেই। এ অবস্থায় সৌদি আরবের নতুন সামরিক জোট নিয়ে আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ নেই। ওই অঞ্চলে ৭০ বছরের পুরোনো সংগঠন আরব লিগ, ওআইসি এবং মধ্যপ্রাচ্য সহযোগিতা কাউন্সিলের মতো সক্রিয় সংগঠন অবশ্য এখনো আছে।
মার্কিন টিভি চ্যানেল সিএনএনে দেওয়া এক বিশ্লেষণে ডেভিড মিলার বলেছেন, ইসলামি সামরিক জোট গঠনের ঘোষণা দেওয়া হলেও সন্ত্রাসের হুমকির চরিত্র সম্পর্কে যেমন কিছু বলা হয়নি, তেমনি উগ্রপন্থী জিহাদি ও ইসলামি জঙ্গিদের প্রসঙ্গে কিছু উল্লেখ করেনি সৌদি আরব। এ ছাড়া জোটের তালিকায় থাকা দেশের নাম থেকে বুঝতে বাকি থাকে না যে এটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন ৬৫ দেশের জোটের বাইরে যেতে চায় না।
পাকিস্তানি দৈনিক দ্য নিউজ-এর এক বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, জোট গঠনের আগে অঙ্কটা ঠিকমতো কষতে পারেনি সৌদি আরব। জোট কতটা কার্যকর হয়, সে জন্য দেখতে হবে আইএস কীভাবে নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে নিজের শক্তি সুসংহত করে যাচ্ছে আইএস। এ জন্য আরব দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কও দায়ী। আইএস-বিরোধী লড়াইয়ের তিন পক্ষ সিরিয়া, লেবানন ও ইরানকে বাদ দিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোট গঠন করেছে সৌদি আরব। অথচ ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের (যাদের ইরানের প্রতিনিধি বিবেচনা করে রিয়াদ) দমন করতে গিয়ে নয় মাস ধরে নাকাল হচ্ছে সৌদি আরব। নিজেদের খণ্ডিত ভাবনার কারণে সৌদি আরবকে সেখানে মূল্য দিতে হচ্ছে।