ওসমানীনগরে প্রেমিককে ছবি পাঠিয়ে প্রেমিকার আত্মহত্যা : আটক ১
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ওসমানীনগরে প্রেমিক বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় মৃত্যুর পূর্বে প্রেমিককে ফাঁস লাগানো ছবি পাঠিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক যুবতী। সে নিজ করনসী গ্রামের মৃত আর্শ্বদ আলীর মেয়ে সেজমিন বেগম (১৮)।
গত বুধবার রাত সাড়ে আটটায় উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউপির নিজ করনসী গ্রামের খালেদ হোসেন করনী ওরফে লিলু মিয়ার খামার বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
এদিকে, ঘটনাটিকে হত্যার নাঠক সাজিয়ে পার্শ্ববর্তী মুমিন নামক এক ব্যক্তিকে ফাঁসানোর জন্য খামার বাড়ির মালিক লিলু মিয়া আত্মহত্যার সকল আলামত গোপন করে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে থানা পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত করেন।
পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে হত্যার বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরু করলেও অবশেষে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে নিশ্চিত হয় যে মেয়েটির তাকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে বলে নিশ্চিত হওয়ার পর রাত ৯টার দিকে লাশ উদ্ধার কেরে থানায় নিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় নিহত যুবতীর মোবাইলে থাকা ছবি ও কললিস্টের সূত্র ধরে উপজেলার খুজগীপুর গ্রামের মোশারফ আলীর পুত্র রুমেল মিয়াকে (৩০) আটক করে পুলিশ। তবে এটি খুন না আত্মহত্যা তা নিয়ে এলাকায় ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুরসালিন জানান- উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের নিজকরনসী গ্রামের মৃত আর্শ্বদ আলীর মেয়ে সেজমিন বেগম (১৮) বুধবার বিকালে প্রেমিকের সাথে অভিমান করে লিলু মিয়ার খামার বাড়ির বসতঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
মৃত্যুর কিছু সময় পূর্বে মেয়েটি তার প্রেমিককে ফোন দিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু কোন অবস্থায় প্রেমিক বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে হুয়াটঅ্যাপ এর মাধ্যমে গলায় ওড়না পেঁচানো ছবি পাঠিয়ে আত্মহত্যা করে মারা যায়। সন্ধ্যায় মেয়েটির মা বাড়িতে গিয়ে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে খামারবাড়ির মালিক খালেদ হোসেন করনী উরফে লিলু মিয়াকে খবর দিলে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটির পরিবারকে ম্যানেজ করে আত্মহত্যার সকল আলম লুকিয়ে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে থানা পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।
পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে হত্যার বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। এসময় একই গ্রামের মুমিন নামের ব্যক্তি মেয়েটিকে হত্যা করতে পারে বলে পুলিশকে জানায় মেয়েটির মা সাফিয়া বেগম। কিন্তু পুলিশের কাছে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হলে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি খুঁজে পুলিশ।
প্রথমে সাফিয়া বেগম মোবাইল ফোন নেই বলে জানলেও পরবর্তীতে পুলিশের চাপের মুখে নিহতের মোবাইল ফোন পুলিশের হাতে তুলে দেন সাফিয়া। মোবাইল ফোন হাতে নিয়েই পুলিশ নিশ্চিত হয় যে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। এসময় সাফিয়াসহ পরিবারের অনান্যদের কঠোর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে বেড়িয়ে আসে ফাঁস লাগানোর সকল আলামত কথিত প্রেমিকের নাম ও ঠিকানা।
অবশেষে বুধবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় উমরপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে কথিত প্রেমিক রুমেলকে (৩০) আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এ ঘটনায় যুবতির ভাই বাদি হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে থানায় মামলা (নং-১৮) দায়ের করেন।