ফেঞ্চুগঞ্জে উদ্বিগ্ন চীনা নাগরিকরা : বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা
ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধি : ফেঞ্চুগঞ্জে অবস্থানরত চীনা নাগরিকদের চলাফেরায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুই বিদেশী হত্যার পর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন চীনারা। দূতাবাস থেকে বিশেষ বার্তা এলে বন্ধ হয়ে যায় তাদের অবাধ চলাচল। সর্বশেষ হোসনি দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি সভায়
বোমা বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় বর্তমানে সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্পের পার্শ্ববর্তী নিজামপুর গ্রাম থেকে চীনা জাংফং কোম্পানির প্রায় ১২০ জনকে প্রকল্প সংলগ্ন নিরাপদ ডরমেটরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকা ও চীনা ডরমেটরিগুলোতে বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা।
২০১২ সালে ফেঞ্চুগঞ্জে দেশের বৃহত্তম শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি নির্মাণের লক্ষ্যে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চায়নার মেসার্স কমপ্লান্ট তাদের আরও ৬টি বৃহৎ সাব কোম্পানি ফেঞ্চুগঞ্জে নিয়ে আসে। শাহজালাল নির্মাণ ইতিমধ্যে শেষ হলেও ওই কোম্পানিগুলোর মধ্যে শাংজি পেট্রোলিয়াম, সিএনসি সিক্স, সিএনসি সেভেন, সিএনসি ইলাভেন কোম্পানির বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ফেঞ্চুগঞ্জে অবস্থান করছে। তাছাড়া নবনির্মিত সারকারখানা কমিশনিংয়ের জন্য জাংফং নামের আরেকটি চীনা কোম্পানির প্রায় শতাধিক চীনা প্রকৌশলী ফেঞ্চুগঞ্জে কর্মরত রয়েছে। প্রকল্প সূত্র জানায়,
শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরির প্রযুক্তিগত কাজে বর্তমানে আমেরিকা, ন্যাদারল্যান্ডস ও জাপানি প্রকৌশলীরাও ফেঞ্চুগঞ্জে ছুটে আসছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জে কয়েক শত চীনা নাগরিক বর্তমানে বাসা থেকে কর্মস্থল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছে তাদের যাতায়াত। আগে হেঁটে চলাচল করলেও বর্তমানে গাড়ি ছাড়া কাউকেই চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে না। জাংফং কোম্পানির এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে জানান, আগে কর্মস্থল থেকে ফিরে
ফেঞ্চুগঞ্জের আনাচে-কানাচে আমরা ছুটে যেতাম। বাংলাদেশে আমরা নিজ দেশের মতোই চলাফেরা করতাম। বিকাল বেলা দল বেঁধে হাঁটতাম। যখন-তখন প্রয়োজন হলেই সিলেট শহরে চলে যেতাম। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রকল্প থেকে বাসায় ফিরে কোথাও যেতে পারছি না। বাইরে
যাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। শাংজি পেট্রোলিয়াম কোম্পানির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, গত ৩ বছর ধরে বাংলাদেশে বসবাস করছি। এ দেশের মানুষ সত্যিই অনেক ভাল। আমাদের চলাফেরা ছিল নিজ দেশের মতো। কিন্তু হঠাৎ করে বাংলাদেশটাকে অচেনা মনে হচ্ছে। বর্তমানে তিনিসহ তার সহকর্মীরা একরকম বন্দি অবস্থায় আছেন বলে তিনি জানান। বিদেশীদের নিরাপত্তার
ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন্দন কান্তি ধর জানান, ফেঞ্চুগঞ্জে বর্তমানে ২৭৪ জন চীনা নাগরিক কর্মরত রয়েছেন। তাদের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ফেঞ্চুগঞ্জের পালবাড়ি চৌরাস্তার মোড় ও ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুর দক্ষিণ পারে শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরিতে কর্মরত বিদেশীদের নিরাপত্তায় দুটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তাছাড়া পুলিশ ও আনসার বাহিনী সমন্বয়ে বিশেষ টহল টিম গঠন করা হয়েছে। কোন বিদেশীকে বাইরে যেতে হলে পুলিশকে অবগত করতে শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের মাধ্যমে জানাতে বলা হয়েছে।