শিক্ষককে থাপড়ে কানের পর্দা ফাটালেন শিক্ষা কর্মকর্তা

10298সুরমা টাইমস ডেস্কঃ শরীয়তপুর সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিকিৎসা শেষে কর্মস্থলে যোগদান করতে গেলে তাঁকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হামিদুল হক গত ৩১ আগস্ট উপজেলার বিনোদপুর অঞ্চলের সাতটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মতবিনিময় সভা করেন। সভায় কীর্ত্তিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কার্ত্তিক চন্দ্র কির্ত্তনীয়ার সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিক্ষা কর্মকর্তা কার্ত্তিক চন্দ্রের বাঁ কানে থাপড় মারেন। পরে উপস্থিত শিক্ষকেরা তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে নেন। চিকিৎসার জন্য ওই দিন বিকেলে তিনি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।

কার্ত্তিক চন্দ্র অভিযোগ করেন, তাঁকে ভয় দেখিয়ে পরের দিন সদর হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ ঘটনা জানিয়ে তিনি ৩ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন করেন। পরে কানের ব্যথা বাড়লে দুই দিন পর তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগে ভর্তি হন। সেখানেও ওই শিক্ষা কর্মকর্তার লোকজন গিয়ে তাঁকে ভয় দেখান। ভয়ে তিনি হাসপাতাল ছেড়ে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।

কার্ত্তিক চন্দ্র আরও বলেন, চিকিৎসা শেষে ৮ সেপ্টেম্বর তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করতে যান। কিন্তু তাঁকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের সহকারী নিবন্ধক দেবব্রত রায় বলেন, আঘাতজনিত কারণে কার্ত্তিক চন্দ্রের কানের পর্দা ফেটে গেছে। চিকিৎসা ও বিশ্রামে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে হামিদুল হক বলেন, ‘আমি কোনো শিক্ষককে মারধর করিনি। বরং ওই শিক্ষক ঘটনার দিন আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।’ এদিকে গত ৮ সেপ্টেম্বর কার্ত্তিক চন্দ্র কির্ত্তনীয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে কৈফিয়ত তলব করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। সেখানে একজন শিক্ষিকাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ারও অভিযোগ করা হয়।

শিক্ষিকার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘কোনো শিক্ষক আমাকে কখনো কুপ্রস্তাব দেননি। আমাদের এটিও স্যারের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের একটি ঝামেলা চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কিছু বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান খান বলেন, এটিও হামিদুল হক শিক্ষককে মারধর করেছেন এমন কোনো প্রমাণ তাঁরা পাননি। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির অভিযোগে ওই শিক্ষককে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। প্রশাসনিক কারণে তাঁর পৈতৃক সম্পত্তির কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে।