বড়লেখায় সংখ্যালঘু কলেজ ছাত্রীর সম্ভ্রমের মূল্য সাড়ে ৩২ হাজার!
বিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জঃ বড়লেখায় সমাজপতিরা সম্ভ্রম হারানো সংখ্যালঘু এক কলেজ ছাত্রীর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারন করে দিলেন ৩২ হাজার ৫শত টাকা। সালিশ বৈঠকের ১৬ দিন পর ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নির্যাতিত ছাত্রীর বাবার নিকট স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন এ টাকা বুঝিয়ে দিয়েছেন। সামাজিক মান মর্যাদা আর সমাজপতিদের ভয়ে কলেজ ছাত্রীর বাবা থানা পুলিশের কাছে মূল ঘটনা আড়াল করছেন। বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, বড়লেখা ডিগ্রী কলেজের সংখ্যালঘু পরিবারের এক ছাত্রী (দ্বাদশ শ্রেণীর) ৮ সেপ্টেম্বর প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা দিয়ে বিকেল তিনটার দিকে বাড়ী ফিরছিল। বাড়ীর অদুরে লেবেন্দুর দোকানের কাছে পৌছামাত্র পূর্ব থেকে ঔত পেতে থাকা নিজ বাহাদুরপুর ইউপির পূর্বমাইজগ্রামের মৃত তছির আলীর বখাটে ছেলে কবির আহমদ ছাত্রীটিকে ঝাপটে ধরে পার্শ্ববর্তী টিলায় নিয়ে সম্ভ্রমহানী ঘটায়। ছাত্রীর চিৎকারে পথচারীরা এগিয়ে গেলে লম্পট কবির পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নির্যাতিত ছাত্রীর বাড়ীতে ১৩ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সুত্র জানায় নিজ বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, ওয়ার্ড মেম্বার ছলিম উদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত প্রাইমারী শিক্ষক ঝর্ণা দাস, সমাজসেবক হিফজুর রহমান প্রমূখের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে কলেজ ছাত্রীর সম্ভ্রমের মূল্য সাড়ে ৩২ হাজার টাকা নির্ধারিত হয়।
নিজবাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন সালিশ বৈঠকের সত্যতা স্বীকার করে জানান, তিনি প্রথমে কলেজ ছাত্রীর সম্ভ্রমহানীর ঘটনার সালিশ নিষ্পত্তির বিপক্ষে ছিলেন। ছাত্রীর বাবা ও সালিশ সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আইনের দ্বারস্থ হতে বারন করায় ঘটনাটির সালিশ মীমাংসা করেন এবং সালিশের টাকা তার কাছে জমা রাখেন। মঙ্গলবার চেকের মাধ্যমে ছাত্রীর বাবাকে তিনি সালিশে নির্ধারিত সাড়ে ৩২ হাজার টাকা প্রদান করেন।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ৩০ সেপ্টেম্বর বুধবার জানান, নারীর সম্ভ্রমহানীর ঘটনা চেয়ারম্যান মেম্বারের সালিশ নি®পত্তির এখতিয়ার নেই। সালিশে অংশগ্রহনকারী কেই তাকে ঘটনাটি জানায়নি। তবে সংবাদকর্মীর মাধ্যমে জেনে ভিকটিম কলেজ ছাত্রীর বাবা মোহিত পুরকায়স্থকে ফোন দিলে তিনি সম্ভ্রমহানী ও টাকা প্রাপ্তির সত্যতা অস্বীকার করে বলেন বখাটে কবির তার মেয়ের গলার চেইন ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনাটি আলাল চেয়ারম্যান ও সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন সালিশে নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। ওসি আরো জানান তিনি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।