অনৈতিক সম্পর্কের জেরে গৃহবধূকে বেঁধে রাতভর নির্যাতন!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিরাজগঞ্জে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে এক নারীকে রশি দিয়ে পিঠমোড়া করে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিকেও আটকে রাখা হয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও স্থানীয়রা বিষয়টি মিমাংসার আশ্বাস দেয়ায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ফিরে আসে। শনিবার রাতে সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের ডিগ্রিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
তবে রবিবার সকালে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিমাংসার করা হয়েছে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।
জানা যায়, বিএডিসি’র সাবেক কর্মচারী ডিগ্রি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা শামসুল বারি খান (৬৫) শনিবার রাত ৯টার দিকে একই গ্রামের এক প্রতিবন্ধীর স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় স্থানীয় যুবকরা টের পেয়ে দু’জনকে আটক করে। এরপর তাদের স্থানীয় একটি স্কুলে নিয়ে ওই নারীর হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেন। এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মাথায় পানি ঢালা হয়। সংবাদ পেয়ে রাত ৩টার দিকে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার হেলাল উদ্দিন ও মাতব্বররা বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে পুলিশকে ফেরত পাঠায়।
তবে ওই নারীর অভিযোগ, জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে শামসুল বারি তাকে ধর্ষণ করেছে। এর আগেও ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিল। অথচ তাকে শাস্তি না দিয়ে শামসুল বারি’র ছোট ভাই অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক শুকুর মাহমুদ খান ও ইউপি মেম্বার হেলালের নির্দেশে আমাকে বেঁধে রেখে একতরফাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এদিকে, অভিযুক্ত শামসুল বারি তাদের দু’জনের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন কিরণ জানান, সামাজিকভাবে সালিশ বৈঠকে বসে শামসুল বারীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে। তবে তিনি স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আরো জানান, দু’জনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। জরিমানার টাকা ওই নারী পেয়েছে কিনা সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূকে হাত বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। এমনকি ওই নারীও হাত বেঁধে নির্যাতন বা ধর্ষণের কথাও বলেনি। শুধু বলেছে, শামসুল বাড়িতে ঢুকে তার হাত ধরেছিল। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে একটি স্কুল ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। দু’জনকে আটক করে থানায় আনতে চাওয়া হলে ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন ও আব্দুল আওয়াল নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ মাতব্বর বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে মীমাংসার আশ্বাস দেন। পরে ওই প্রতিনিধিরা ওসি সাহেবের কথা বলেন। ওসির পরামর্শ মোতাবেক কাউকে আটক করা হয়নি। একই কারণে কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি।