ঝিনাইদহে ১১ মাস বয়সী শিশুর ১৯ ঘণ্টা হাজতবাস
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বাবাকে ধরতে না পেরে পুলিশ ১১ মাস বয়সী শিশু রয়েল ও তার মাকে আটক করে। এরপর গভীর রাত থেকে প্রায় ১৯ ঘণ্টা তাদের থানায় আটকে রাখে।
পরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ৪২,০০০ টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে, বুধবার রাতে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, গত বুধবার রাতে রয়েলের বাবা রাজু আহম্মদকে ধরতে গিয়েছিল পুলিশ। না পেয়ে ধরে নিয়ে আসে তার মাকে, সঙ্গে তাকেও। এরপর মা ও শিশুপুত্রকে ১৯ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় থানাহাজতে।
রয়েলের বাবা রাজু আহম্মদের অভিযোগ, স্ত্রী-সন্তানকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতে ৪২,০০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে পুলিশকে। তবে পুলিশের অভিযুক্ত কর্মকর্তা এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছুই বলছেন না।
মহেশপুর উপজেলার বাসিন্দা রাজু আহম্মদ বলেন, তার নামে একটি মামলা ছিল। তবে ১৬ দিন আগে তিনি ওই মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। বুধবার রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একই উপজেলার লাটিমা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান তিনি।
রাত আটটার দিকে মহেশপুর থানার টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (টিএসআই) আমির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই বাড়িতে যায়। পুলিশ তার নাম ধরে ডাকাডাকি করতে থাকলে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান। তারা তাকে আটক করতে না পেরে স্ত্রী ও ১১ মাসের ছেলে রয়েলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
রাজুর অভিযোগ, আটকের সময় তার স্ত্রীকে মারধর করা হয়। নারী পুলিশ না থাকায় পুরুষ পুলিশরা সন্তানসহ তার স্ত্রীকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যান। বুধবার রাতে তার স্ত্রী-সন্তানকে থানাহাজতে আটকে রাখা হয়।
তিনি বলেন, ‘এরপর বৃহস্পতিবার সকালে থানার টিএসআই আমির হোসেন তাদের ছাড়তে ৫০,০০০ টাকা দাবি করেন। এক পর্যায়ে ৪২,০০০ টাকা দিয়ে বেলা তিনটার দিকে তাদের মুক্ত করেন।’
ধারদেনা করে টাকার জোগাড় করে চাচা আবদুল আজিজের হাত দিয়ে টাকা পৌঁছে দেন বলে জানান রাজু আহম্মদ।
তার চাচা আবদুল আজিজ বলেন, রাজু মুঠোফোনের মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকার চুক্তি করেন। তিনি টাকা নিয়ে থানায় যান। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তা আমিরের হাতে টাকা তুলে দিয়ে বৌমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে টিএসআই আমির হোসেন বলেন, ‘রাজু আহম্মদ মামলায় জামিন নিলেও তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে তাকে আটক করতে গিয়েছিলাম। পুলিশ দেখে রাজু পালিয়ে যান।’
তিনি বলেন, ‘এরপর তার স্ত্রীকে একা অন্যের বাড়িতে রেখে আসলে কেমন হয়, তাই নিরাপত্তার জন্য মা-ছেলেকে থানায় এনে রাখা হয়।’
টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আমির হোসেন প্রসঙ্গ পাল্টাতে থাকেন। একাধিকবার প্রশ্ন করলে পরে কথা বলবেন বলে জানান।