শাবি শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা : নিন্দার ঝড়…
সুরমা টাইমস ডেস্ক: ভিসি বিরোধী আন্দোনকারী শিক্ষকদের উপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়।
রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ভিসিবিরোধী শিক্ষক জোটের অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সময় শিক্ষকদের লাথি মারতেও দেখা গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নারী শিক্ষকরাও তাদের মারধর থেকে রেহাই পাননি; ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হন অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।
শিক্ষকদের উপর ছাত্রলীগের এমন হামলার পরপরই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল হক শাকিল লিখেন, “ছি!”
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, যিনি নিজেও ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নিজের ফেইসবুক পেইজে তিনি লিখেছেন, “শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপর গুণ্ডা লেলিয়ে দেওয়া ভিসিকে এখনি অপসারণ করুন। যারা শিক্ষকদের গায়ে হাত তোলে তারা কীসের ছাত্র, কীসের ছাত্রলীগ? এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দিন।”
“মায়ের পেটের শিশু থেকে শিক্ষক; আপনারা আমাদের আর লজ্জা দেবেন না প্লিজ!”
নিজের ফেইসবুকে কভার ফটো হিসেবে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বৃষ্টিতে ভেজার ছবি আপলোড করে নিন্দা জানিয়েছেন ব্লগার আরিফ জেবতিক।
তিনি লিখেছেন, “ছাত্রলীগের হাতে শাবি শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হওয়ার দুঃখে স্তব্ধ হয়ে বসে আছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার। অঝোর বৃষ্টিতে কী স্যারের চোখের জল মিশে যাচ্ছে?”
জাহাঙ্গীর আলম খান নামে একজন আরিফ জেবতিকের ছবির নিচে মন্তব্য করেছেন, “উনি কবে বুঝবেন- জয়বাংলা কবেই লুট হয়ে গেছে গণমানুষের মুক্তি আন্দোলন থেকে এক ঝাঁক লুটেরাদের কাছে !”
মাহবুব রাজীব নামে একজন লিখেছেন, “এই ঘটনাগুলো অনেক কষ্ট দেয়। বিশেষ করে সভানেত্রীর জন্যেই বেশি খারাপ লাগে। এতো পরিশ্রম উনি করেন অথচ আমরা সব শেষ করে দিই।”
কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে গত ১২ এপ্রিল থেকে আন্দোলনে রয়েছে সরকারসমর্থক শিক্ষকদের একাংশের জোট ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’।
তাদের এ আন্দোলনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি ‘অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তার চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে ভিসির পক্ষে রয়েছেন সরকার-সমর্থক শিক্ষকদের আরেকটি অংশ।
অচলাবস্থা কাটাতে দুই পক্ষের সঙ্গেই বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। নিয়োগ, নতুন ব্যবস্থা চালু বা কাউকে নতুন কোনো পদে দায়িত্ব দিতে নিষেধ করে ভিসির ক্ষমতা কার্যত খর্বও করা হয়েছে।
এর পরও আমিনুল হক ভূইয়া ভিসি পদ না ছাড়ায় শিক্ষকরাও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।