নবীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তদন্ত শেষে মামলা রেকর্ড

sosangat nabiganjউত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) নবীগঞ্জে জন্তরী (কলেজ পাড়া) গ্রামের মুক্তিযুদ্ধার সন্তান গোপাল সরকারকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত শেষে অভিযুক্ত নজাপতসহ ৫ জনের বিরোদ্ধে থানায় মামলা রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। মালনা নং ২৯/২৭/২০১৫। গতকাল উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আনোয়ার হোসেন। এছাড়াও আলোচিত ঘটনাস্থল ৫টি সংগঠনের তরফ থেকে সরেজমিন তদন্ত হয়। এসময় শ্মশান ঘাটে লাশ দাফনে বাঁধা,নির্যাতন,হত্যার হুমকিসহ লোকহর্ষক অনেক ঘটনার তথ্য উদঘাটনের দাবি উঠেছে। উপজেলা জাতীয় হিন্দু মহাজোট, উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ,মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, পুজা উদযাপন পরিষদ, উপজেলা মানবাধিকার কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড সূত্রে প্রকাশ,উপজেলার ৭ নং করগাঁও ইউনিয়নের জন্তরী (কলেজ পাড়া) গ্রামের মুক্তিযুদ্ধা গৌরাঙ্গ সরকারের পুত্র গোপাল সরকার নিজেদের শ্মশান রক্ষায় বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় ভূমি অফিস এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস শ্মশানের অনুকুলে প্রতিবেদন দেয়। এঘটনায় ক্ষোব্ধ হন একই গ্রামের নজাপত মিয়া গং। উল্লেখিত এলাকার একমাত্র শ্বসানের ভূমি ছেড়ে দেয়ার জন্য সনাতন ধর্মালম্বীদের হুমকি দেন। ওই ভূমি তাদের প্রয়োজন নেই মর্মে লিখিত দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। ২১ আগষ্ঠ রাতে অভিযুক্ত নজাপত তার লোকজন নিয়ে গোপাল সরকারকে কলেজের নিকটবর্তী রুহুল মিয়ার দোকানে পেয়ে সাদা কাগজে লিখিত দেয়ার জন্য চাপ দেয়। অন্যথায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত প্রায় ১২ ঘটিকায় নজাপত মিয়ার নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা ঘরের ভিতর প্রবেশ করে কেরোসিন গোপাল সরকারের শরীরে ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে গোপাল সরকারের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এনিয়ে অভিযোগকারী রাখাল সরকারকে জিজ্ঞাসাবদ করে পুলিশ। ২৬ আগষ্ট পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্রের নির্দেশে এএসপি সাজেদের নেতেৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ২৭ আগষ্ট রাখাল সরকারের লিখিত অভিযোগ থানায় রেবকর্ডভুক্ত হয়। অভিযুক্তরা হলেন,মোঃ নজাপত মিয়া ((৬৫) তার দুই পুত্র খালেদ মিয়া (৩৫) জুনেদ মিয়া (৩০) মছরত উল্যার পুত্র এনামুল মিয়া (২৬) মছরত উল্যা (৬২) সহিদ মিয়া (৩৫)। মামলা সূত্রে প্রকাশ,২১ আগষ্ঠ রাতে প্রধান আসামী নজাপত মিয়ার নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা ঘরের ভিতর প্রবেশ করে গোপাল সরকারকে মারপিট শুরু করে। তার চিৎকারে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে খালেদ মিয়া তার হাতে থাকা কেরোসিন গোপাল সরকারের শরীরে ছিটিয়ে দেয়। নজাপত মিয়া দিয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে গোপাল সরকারের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। রহস্য উদঘাটন এবং সংশয় যুক্ত হওয়ায় পুলিশের তরফ থেকে জিডির খবর পাওয়াগেছে। উপজেলা জাতীয় হিস্দু মহাজোট,হিন্দু-বৌদ্ধ,খ্রিষ্টান ্লক্য পরিষদ ও পুজা উদযাপন পরিষদেও লোকজন ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হয়ে আইনানোগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। অভিযোগকারী রাখাল সরকার বলেন,অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উল্লেখিত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন,নির্যাতন ছাড়াও অনেক বর্বরতার তথ্য পেয়েছি।