কোম্পানীগঞ্জে যাত্রীবাহি বাসে ডাকাতি : ৩০ যাত্রী গুলিবিদ্ধ
চালক বললেন, পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাইনি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের বুরনী এলাকায় এমআর পরিবহন নামের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাত দলের ছুড়া গুলিতে ৩০ যাত্রী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের টুকেরবাজার থেকে এমআর পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। বাসটি বুরনী এলাকাস্থ কাটাখাল ব্রীজের কাছে আসামাত্র ডাকাতরা আক্রমণ করে। এ সময় বাসটি থামানোর জন্য ডাকাতরা এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়া শুরু করে। এ সময় ৩০ যাত্রী গুলিবিদ্ধ হন। তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই ডাকাতরা যাত্রীদের মালামাল লুট করে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলওয়ার হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ডাকাতরা নৌকায় এসে বুরনী নামক স্থানে এমআর পরিবহন নামের একটি বাসে ডাকাতি করেছে। আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। এছাড়াও ডাকাতদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ করেছেন কোম্পানীগঞ্জে ডাকাতদলের কবলে পড়া যাত্রীবাহি বাসের চালক মকবুল হোসেন। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে ডাকাতদের আক্রমণের খবর জানানো হলেও তারা সাহায্যে এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২ টায় এই প্রতিবেদকের কাছে এমন অভিযোগ করেন চালক মকবুল হোসেন। ডাকাতদের হামলায় যিনি নিজেও আহত হয়েছেন।
ডাকাতদলের হামলার বর্ণনা দিয়ে বাসের চালক মকবুল হোসেন বলেন, দুটি ইঞ্জিন নৌকা করে ৩০/৩৫ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল প্রথমে কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল পেট্রোল পাম্পের সামনে আক্রমণ করে। তারা বাসের সামনের গ্লাসে গুলি করে বাস থামাতে চায়।
মকবুল বলেন, ডাকাতদের হামলার সাথে সাথেই আমি কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই। এসময় ওসি জানান, সামনের কাটাখাল ব্রিজের পাশে পুলিশের টহল রয়েছে। গাড়ি নিয়ে কাটাখাল ব্রিজের পাশে চলে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
চালক মকবুল হোসেন বলেন, ওসির কথামতো আমি ডাকাতদের ব্যারিকেড উপেক্ষা করে গাড়ি নিয়ে কাটাখালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। কাটাখাল গিয়ে দেখি ইঞ্জিন নৌকায় করে ডাকাতরা আগেই সেখানে পৌছে গেছে। কিন্তু কোনো পুলিশ সদস্যকে সেখানে দেখিনি।
মকবুল হোসেন বলেন, এসময় ডাকাতরা এসেই আমার ডান হাতে চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। আমি সাথে সাথে বাস থেকে নেমে যাই। তারপর ডাকাতরা গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে যাত্রীদের উপর হামলা চালায়। তারা যাত্রীদের উপর গুলি ছুঁড়ে ও কুপিয়ে তাদের সর্বস্ব লুটে নেয়। হামলায় নারী পুরুষসহ অন্তত ত্রিশ যাত্রী আহত হন বলে জানান মকবুল।
ডাকাতদল সর্বস্ব লুটে নিয়ে নৌকা করে চলে যাওয়ার পর কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে বলে জানান তিনি। এরপর আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
কাটাখাল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আজমত আলী প্রতিবেদককে বলেন, কাটাখাল এলাকায় প্রতিদিন পুলিশের টহল থাকলেও বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ছিলো না। বাস চালকের এ অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলওয়ার হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তবে দূর্ঘটনার পরপর তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, গুলিবিদ্ধ ৩০ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ডাকাতদের ধরতে অভিযান চলছে।