রাত জেগে পাহারা : ডাকাত আতঙ্কে শাহপরাণ এলাকায় বাসিন্দারা
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ প্রতিটি রাত আতঙ্কে কাটে সিলেট মহানগরীর শাহপরাণ থানা এলাকার বাসিন্দাদের। কয়েকদিন পর পরই সংঘঠিত হচ্ছে ডাকাতি। লুন্ঠিত হচ্ছে মালামাল। ডাকাতদের হামলায় আহতও হয়েছেন আক্রান্ত পরিবারের অনেকে।
এসব ঘটনায় মামলা হয় যথারীতি। ডাকাতি প্রতিরোধে প্রতিনিয়ত অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও দাবি পুলিশের। কিন্তু তবুও থেমে নেই ডাকাতি।
আর এ কারণে ঘুম হারাম হয়ে গেছে এলাকার মানুষের। রাত জেগে পাহারা বসিয়েছেন স্থানীয় কয়েক এলাকার বাসিন্দারা।
সম্প্রতি ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আটক তিনজনকে জনতার কবল থেকে উদ্ধার করে নেয় পুলিশ। এদের মধ্যে রিপন মিয়া নামে একজন ডাকাতির সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা আদালতে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছেন। এরআগে একইভাবে চার ডাকাতকে আটক করে গণপিটুনি দেয় জনতা। এ ঘটনায় এক ডাকাত মারা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর শাহপরাণ থানাধীন বালুচর এলাকা শহরতলীর খাদিম চা বাগান সংলগ্ন হওয়ায় রাতে ডাকাতি হয় বেশি। এছাড়া ওই থানাধীন সেনপাড়া, খড়াদিপাড়া, বালুচর (আল্-ইসলাহ), বালুচর (জোনাকী), বালুচর (ফোকাস), লাকড়ীপাড়া, সাদিপুর, মাদানীবাগসহ আশপাশের এলাকার লোকজন রয়েছেন ডাকাত আতঙ্কে।
স্থানীয়দের অভিযোগ- ডাকাতদের অনেকে স্থানীয় ভাষায় কথা বলেন। তাদের ধারণা স্থানীয় ডাকাতরা বিভিন্ন সময় ডাকাতির ঘটনা ঘটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতিতে খোদ পুলিশের ভুমিকা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান- সর্বশেষ গত পরশু দিন হাফ প্যান্ট-গেঞ্জি পরিহিত ডাকাতরা নগরীর রায়নগরের একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। এর আগে মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) নগরীর বালুচর আল্-ইসলাহ ১৯/১ এক পররাষ্ট্র কর্মকর্তার বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এছাড়া লন্ডন প্রবাসী রিজিয়া বেগম চৌধুরীর বাসায় মঙ্গলবার ডাকাতরা হানা দেয়। অস্ত্রের মুখে পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয়।
২২ জুলাই সেনপাড়ার জয়দেব চক্রবর্তীর পুষ্পায়ন-১০২ নং বাসায়, ৫ আগস্ট বালুচরের আব্দুল হাকিমের ফোকাস-১২নং বাসায় ডাকাতির ঘটনাঘটে। অবশ্য ওই ঘটনায় শাহপরাণ থানা পুলিশ ৩ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে।
একইভাবে সেনপাড়ার টুটুল চৌধুরী, সাদিপুর এলাকার আতাউর রহমান, সেনপাড়া পুস্পায়ন এলাকার জয়দেব চক্রবর্তীর বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এদিকে, আদালতে ডাকাত রিপন মিয়ার জবানবন্দিতে ৪নং টুলটিকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মুসাব্বির’র প্রাইভেট কার চালক সপুর ডাকাতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার কথা উঠে আসে।
রিপন মিয়ার দেওয়া জবানবন্দির সূত্র ধরে সম্প্রতি মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে অভিযান চলায় বালুচর ও আশপাশের এলাকায়। তবে ওই অভিযানে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। অভিযানের সত্যতাও স্বীকার করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এসএম রুকন উদ্দিন।
শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি প্রতিদিন ডাকাত ধরতে ও লন্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে। শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখন বর্ষার মৌসুম, চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পাবেই। কাজেই প্রত্যেকে এলাকার লোকজন নিজের থেকে সচেতনা অবলম্বন করে থাকাটা খুবই প্রয়োজন। মূল প্রতিবেদনঃ বাংলা নিউজ ২৪