ভারতকে পেয়ে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসরের এই ফাইনাল নিয়ে স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনার কমতি নেই। স্থানীয় আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিকেল ৫ টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটির সব টিকেট বিক্রি শেষ। তবে এরই মধ্যে আবার আয়োজকরা ‘হাস্যকর’ এক ভুল করে বসেছেন। টিকেটে ম্যাচ শুরুর সময় দেওয়া হয়েছে সন্ধ্যা ৬ টায়! ক্ষমা চেয়ে, মাইকিং করে ভুল শুধরানোর চেষ্টা করছেন তারা। মাঠে লড়বে যে দুই দল, আগের দিনের প্রস্তুতিতে তাদের শরীরীভাষা দুই রকম। সিলেটের একটি হোটেলের সুইমিংপুলে ভারতের খেলোয়াড়রা অনেকটা নীরবেই সাঁতার কেঁটে উঠে গেল। কিন্তু শাওন-সাদ-ফাহিমদের দাপাদাপি, মাতামাতিতে একই পুলের জল উপচে পড়লো। সাঁতার শেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব শুরু হতেই ছয় দিনের মধ্যে তিন ম্যাচ খেলার ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে প্রত্যয়ী কণ্ঠগুলো একসঙ্গে বেজে উঠল- কখনও না পাওয়া ট্রফিটা এবার উঁচিয়ে ধরতেই হবে। মিডফিল্ডার সাদউদ্দিন যেন পণ করেই বললেন “ওদের হারিয়ে আমরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ওদের সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে। এবারও আমরাই জিতব।” অধিনায়ক শাওন অবশ্য একটু সাবধানী, “আগের ম্যাচে ভারতকে হারিয়েছি বলে এবার তাদেরকে হালকাভাবে নিচ্ছি না। কিন্তু আমাদের আশা আছে, দেশের মাটিতে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।” সাফের তরুণদের এই প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত খেলা ১১ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ৭টি; বাকি চার ম্যাচের ১টি ড্র এবং ৩টিতে হার। ভারতের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে বাংলাদেশ সমানে সমান। ২০১৩ সালের গ্রুপ পর্বে ২-০ গোলের হারের প্রতিশোধ এবার গ্রুপ পর্বেই ২-১ গোলে জিতে নিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত অপরাজিত বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দাপুটে শুরু, পরে ভারতকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। আর সেমি-ফাইনালে আফগানিস্তানকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের মঞ্চে শাওন-নিপুরা। টানা তিন ম্যাচ জিতে ফাইনালে আসা প্রতিপক্ষকে তাই ‘শক্তিশালী’ মেনে নিতে আপত্তি নেই ভারত কোচ বিতান সিংয়ের। “গ্রুপ পর্বে যেহেতু আমরা তাদের কাছে হেরেছি, সেহেতু ফাইনালে আরও সতর্ক হয়ে নামব।” টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত রক্ষণ দেয়াল টপকে, ফয়সাল আহমেদের বিশ্বস্ত গ্লাভসকে ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশের জালে বল জড়িয়েছে মাত্র একবার। ফরোয়ার্ডে সরোয়ার জামান নিপু আর তার পেছনে শাওন-ফাহিম-সাদে গড়া জমাট মাঝমাঠও যেন বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলের নতুন করে জেগে ওঠার বার্তা দিচ্ছে। দুই ম্যাচে দুই হলুদ কার্ড দেখা নিপুকে অবশ্য ভারতের বিপক্ষে পাচ্ছেন না জিলানী। গতিময় এই ফরোয়ার্ডকে হারানো ‘বড় ক্ষতি’ বলেই মানছেন তিনি। “সাদ আর নিপুর কম্বিনেশনটা ছিল প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্কের। নিপু না থাকলে সাদের ক্ষতি হবে; দলের জন্যও সেটা বড় ক্ষতি। নিপুর জায়গায় রনি বা মেরাজের খেলানোর সম্ভাবনা আছে। ওরা নিপুর মতো গতিময় না হলেও টেকনিক্যালি ভালো।” ২০০৩ সালে সাফ গেমসে বাংলাদেশ জাতীয় দল সর্বশেষ শিরোপা জিতেছিল। এরপর সাফের জাতীয় দল বা বয়সভিত্তিক কোনো আসরে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়নি। এবার সে আক্ষপ ঘোচানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন শাওন-সাদরা। জিলানী আরও বড় কিছু পাওয়ার আশা নিয়ে জানালেন, জয়ের স্বপ্ন পূরণ হলে তা হবে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক ফুটবলের জন্য ‘টার্নিং পয়েন্ট’।