সুনামগঞ্জে স্কুলছাত্রী অপহরণকালে জনতার হাতে আটক ২
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ৬ষ্ট শ্রেণীর ২ স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্ঠাকালে লেগুনাসহ লেগুনা চালক ও হেলপারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানী জনতার। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যে লেগুনা চালক ও হেলপারকে ১ বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
সাজাপ্রাপ্ত লেগুনা চালক জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের রতিয়ারপাড়া গ্রামের মৃত হাজী ইসকন্দর আলীর ছেলে সাজন মিয়া (৩৫) ও হেলপার একই উপজেলার জগন্নাথপুর নয়াহাটি গ্রামের আব্দুল বারিকের ছেলে মোঃ আসকির মিয়া (৩০)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১২টায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের আব্দুর রশিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণীর এক ছাত্রী স্কুলে আসার সময় পায়ে সামান্ন আঘাত প্রাপ্ত হলে স্কুলের শিক্ষকরা থাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন।
এ সময় স্কুলের শিক্ষকরা ঐ ছাত্রীর পাশের বাড়ির অপর ছাত্রীকে তার সাথে চলে যেতে বললে দু’জন স্কুল থেকে পাগলা-জগন্নাথপুর রাস্থায় গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে। একটু পরেই জগন্নাথপুর মূখী একটি লেগুনা আসতে দেখে দু’ছাত্রী গাড়ি থামানুর জন্য সিগন্যাল দিলে লেগুনা চালক গাড়ি থামিয়ে তাদেরকে গাড়িতে তুলে। ছাত্রী দু’জন ছাড়া ঐ গাড়িতে আর কোন যাত্রী ছিলনা। হেলপার চালকের পাশে বসা ছিল। কিন্তু ছাত্রীদের নিয়ে চালক ও হেলপার অপহরেণের চেষ্ঠায় ছয়হাড়া ব্রীজের টুল আদায় না করে এখান থেকে লেগুনার গতি আরও বাড়িয়ে দিয়ে তা অতিক্রম করে ছাত্রীদের গন্তব্য এলাকা ছেড়ে চলে যেতে দেখলে গাড়িতে থাকা ২ ছাত্রী চালক ও হেলপারকে গাড়ি থামানুর কথা বললে চালক ও হেলপার কোন সাড়া দেয়নি।
পরে জৈনক ছাত্রীরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে। তাদের চিৎকারে আশ পাশের লোকজন গাড়িটিকে লক্ষ করে পেছনে পেছনে দৌড়াতে থানেক এবং এলাকার লোকজনও চিৎকার করতে থাকেন। ঐ সময় এক যুবক তার সাইকেল নিয়ে গাড়িটির পিছনে দাওয়া করে।
এক সময় লেগুনাটি ভমভমি বাজার ছেড়ে ভাতগাও বাজার এলাকায় পৌছায় এবং সেই বাজারের সামনে স্প্রীডব্রেকার থাকা লেগুনা চালক গাড়িটির গতি কমিয়ে আনলে লেগুনায় থাকা দু’ছাত্রী লেগুনা থেকে লাফ দিয়ে রাস্থায় পরে যায়। ছাত্রী দু’জন লেগুনা থেকে লাফ দিয়ে রাস্থায় পড়তে দেখে বাজারে থাকা লোকজন লেগুনাটিকে থামান এবং চালক ও হেলপারকে আটক করেন।
পরে দু’ছাত্রী স্থানী লোকজনকে ঘটনাটি খোলে বললে স্থানীয় লোকজন লেগুনা চালক ও হেলপার সহ লেগুনাটি আব্দুর রশিদ উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। আব্দুর রশিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকার লোকজন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা এ এস আই ইকবালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থনে পৌঁছে আটককৃত লেগুনা (সিলেট ন ১১-০৬৮২) ও চালক সাজন মিয়া এবং মোঃ আসকির মিয়া উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় বিকাল ৪টায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ হাফিজুর রহমানের ভ্রাম্যমান আদালতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৮৬০ এর (৩৫৪) ধারায় চালক ও হেলপারকে ১ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন, এবং লেগুনাটি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের হেফাজতে রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল-আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন চালক ও হেলপারকে ১ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। তাদেরকে আজ সুনামগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।