পুলিশে চাকুরি দেবে বলে গরু বিক্রির টাকা দেই ছাত্রলীগ নেতাকে (ভিডিও)

Abdul_Ali_24920সুরমা টাইমস ডেস্কঃ পূর্ব বিরোধের জের ধরে সিলেটের মদন মোহন কলেজের মানবিক শাখার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল আলী তালুকদার (১৯) খুন হয়েছে তারই রাজনৈতিক সহকর্মীদের হাতে। আলী হত্যাকান্ডের পর দেখা দিয়েছে নানা ধরনের রহস্য।
হত্যাকান্ডের পর পুলিশের বিশেষ ইউনিট বুধবার বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পূর্ণজিৎ দাস ও রুহুল কান্তি দে বাসু (২৪) নামে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত আলী খুনের পেছনে তার পুলিশে নিয়োগ দেয়ার নামে টাকা লেনদেনের বিষয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহত আব্দুল আলী তালুকদারের চাচা মোহাম্মদ আলী। ঘটনার পর সিলেট ওসমানী হাসপাতালে মোহাম্মদ আলী বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন ভাতিজাকে হারিয়ে। তার বক্তব্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে সিলেট টাইমস্ বিডি’র পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।
তিনি বলেন, প্রায় এক বছর পূর্বে আমার ভাই আখলিস’কে তার ছেলেকে পুলিশের চাকরি দেয়ার নাম করে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন ছাত্রলীগের এক নেতা। এমনকি টাকা দেয়ার পর তিন দিনের ভেতরে পুলিশ চাকুরি দেয়ারও কথা জানান ওই নেতা।
সাথে সাথে ওই দিনই ৭০ হাজার টাকার গৃহস্থলি (গরু) ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করি। এছাড়াও আরেক ভাইয়ের কাছ থেকে বাকি ৫ হাজার টাকা নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী একরামের কাছে তুলে দেই ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু টাকা দেয়ার এক বছর হলেও আলীর ইন্টারভিউও হয়নি চাকরিও হয়নি।
চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত দেয়ার কথা বললে ছাত্রলীগের একরাম বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিতেন। তবে হাসপাতালে নিহত আলীর পরিবারকে নানা ধরনের নাটক তৈরী করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলীর পরিবারের কোন সদস্যকে কথা বলতে দেয়নি।
এমনকি কথা বলতে দেখলেই তাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রলীগের এমন আচরণে নানা ধরনের প্রশ্ন থেকেই যায়?
এ ব্যাপারে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিলামের ইউনিয়ন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাদিক মিয়ার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল আলী তালুকদার হত্যার সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।
এঘটনার সাথে নিরীহ কেউ যেন হয়রানীর শিকার না হন সে ব্যাপারে তিনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিলেট কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমদ জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটক পূর্ণজিৎ দাস ও রুহুল কান্তি দে বাসু প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বলে শিকার করেছে। হত্যাকান্ডের বিষয়ে থানায় বিস্তারিত তথ্যের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

https://www.youtube.com/watch?v=qoRNS5A4weQ&feature=youtu.be

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী সন্ত্রাসি হামলা নিহত আব্দুল আলীর বাবা আলকাছ মিয়া এই মর্মে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি যে, ১৩ আগষ্ট ১৫ ইং তারিখে জাতীয় ও স্থানিয় কয়েকটি পত্রিকায় “মদন মোহন কলেজ ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাত ঘটনা, চাকুরির জন্য দেয়া ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় নিজ দলের কমীর হাতে খুন দরিদ্র আব্দুল আলী” শিরোনামে যে সংবাদে প্রকাশ হয় যাহা সঠিক নয়। প্রকৃত পক্ষে আমার ছেলে আব্দুল আলী মদন মোহন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর একজন ছাত্র ও ছাত্রলীগের একজন কর্মী। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে আমার ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে প্রাণে হত্যা করে প্রণজিৎ, আঙ্গুর, তকদির, মাসুদ সহ ৫ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন। যাহা আমি আমার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছি। কিন্তু আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু স্বর্থান্বেষি মহল তাদের ফায়দা হাসিল করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তাই আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে কোন ধরণের বিভ্রান্তি মূলক বক্তব্য প্রদান না করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। সাথে সাথে প্রকৃত ঘটনা নিয়ে বক্তব্য প্রদান ও সঠিক সত্য সংবাদ প্রকাশ করে আমার ছেলে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করাতে সবার প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাই। এবং গত ১৩ আগষ্টে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ঘুষের টাকা নিয়ে আমার ছেলে খুন হয়েছে এ ধরণের সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সবার প্রতি বিনীত অনুরোধ রইল।