পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হন নিলয়

Niloy Chakroborti2সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ব্লগার রাজিব থেকে অনন্ত বিজয় দাশ, চার জন ব্লগারকে একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো বেশ ক’জন। এ নিয়ে দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল থেকেও তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি উঠেছে। কিন্তু থেমে থাকেনি ধর্মের নামে এই হোলি খেলা। সর্বশেষ শুক্রবার খুন হলেন নিলয় চৌধুরী (৪০) ওরফে নিলয় নীল।
এই ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডে মূল হোতার ধরা না পড়া এবং ঘটনা অব্যাহত থাকায় প্রশাসনের গাফিলতির দিকেই আঙ্গুল তুলছেন সবাই। কারণ হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রত্যেক ব্লগারই বেশ কিছুদিন আগেই হত্যার হুমকি পেয়েছেন। এমনকি নিলয়ের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকেও জানা যাচ্ছে তিনি সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে পুলিশ নেয়নি। গত ১৫ মে এই স্ট্যাটাস দেন তিনি। সেটি হুবহু তুলে দেয়া হলো:niloy-blog01
আমাকে দুজন মানুষ অনুসরণ করেছে গত পরশু। ‘অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার’ প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে যোগদান শেষে আমার গন্তব্যে আসার পথে এই অনুসরণটা করা হয়। প্রথমে পাবলিক বাসে চড়ে একটা নির্ধারিত স্থানে আসলে তারাও আমার সাথে একই বাসে আসে। এরপর আমি লেগুনায় উঠে আমার গন্তব্যস্থলে যাওয়া শুরু করলে তাদের মধ্যে একজন আমার সাথে লেগুনায় উঠে। লেগুনায় বসে আমার মনে পড়ে বাসে তো এই ব্যক্তিই ছিলো কিন্তু তারা তো দুইজন ছিল। মনে মনে ভাবি হতেই পারে, একজনের গন্তব্য অন্যদিকে তাই সে চলে গেছে।
এ পর্যন্ত ব্যপার স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে লেগুনায় বসে সেই যুবক ক্রমাগত মোবাইলে টেক্সট করছিল যা দেখে আমার সন্দেহ হয়। আমি আমার নির্ধারিত গন্তব্যস্থলের আগেই নেমে গেলে আমার সাথে সেই তরুণও নেমে পড়ে। আমি বেশ ভয় পেয়ে সেখানের একটি অপরিচিত গলিতে ঢুকে যাই। পরে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ঐ তরুণের সাথে বাসে থাকা আরেক তরুণ এসে যোগ দিয়েছে এবং তারা আমাকে আর অনুসরণ না করে গলির মুখেই দাড়িয়ে আছে। তখন থেকে আমি নিশ্চিত হলাম যে আমাকে অনুসরণ করা হচ্ছে কারণ তাদের দুজনের গন্তব্য একই জায়গায় হলেও তারা ভিন্নভাবে এসেছিলো এবং আমাকে অনুসরণ করেছিলো। আমি গলির আরও অনেক ভীতরে যেয়ে রিক্সা নিয়ে হুড ফেলে আমার গন্তব্যস্থলে যাই এবং পরে কাছের এক বন্ধুর সহযোগিতায় আপাত নিরাপদেই পৌছাই।
এই ঘটনায় জিডি করতে যেয়ে আরও উদ্ভট পরিস্থিতির সম্মুখীন হই। প্রথমেই এক পুলিশ অফিসার ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছিলো যে এই ধরণের জিডি পুলিশ নিতে চায় না কারণ ব্যক্তির নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যপারে যে কর্মকর্তা জিডি গ্রহণ করবে তার একাউন্টেবেলিটি থাকবে সেই ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। আর যদি ঐ ব্যক্তির কোন সমস্যা হয়, সেইক্ষেত্রে ঐ পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার জন্য চাকুরী পর্যন্ত চলে যেতে পারে। থানায় জিডি করতে ঘুরেও একই চিত্র দেখলাম, অনুসরণকালে অনেকগুলো থানা অতিক্রম করার জন্য গতকাল ঘটনাস্থলের আওতায় থাকা একটি থানায় গেলে তারা জিডি নিলো না, তারা বললো আমাদের থানার অধীনে না, এটা অমুক থানার অধীনে পড়েছে ওখানে যেয়ে যোগাযোগ করুন, আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশ ছেড়ে চলে যান।