দক্ষিণ সুরমায় মাদ্রাসা ছাত্রীর শ্লীলতাহানীতে ব্যর্থ হয়ে কুপিয়ে জখম

ema Begomসুরমা টাইমস ডেস্কঃ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করতে না পেরে তার পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ সুরমার শ্রীরামপুর শেখপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, দক্ষিণ সুরমার শ্রীরামপুর শেখপাড়া গ্রামের মৃত গেদন মিয়ার নিরীহ বিধবা স্ত্রী মেহেরজানের সাথে একই এলাকার প্রভাবশালী মুহিবুর রহমানের জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধ চলে আসছিল।
সম্প্রতি মুহিবুর রহমানের ছেলে তামিমের সাথে মেহেরজানের মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে ইমা বেগমের বিয়ের প্রস্তাব দিলে তামিম বখাটে হেরোইনসেবী হওয়ায় বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হননি মেহেরজান। পরে মাদ্রাসায় যাতায়াতের সময় প্রতিদিনই মেহেরজানের মেয়ে ইমা বেগমকে বিরক্ত করত তামিম ও তার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে ইমা বেগমের মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন মেহেরজান।
কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টায় তামিম ও তার সহযোগী একই এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে নাছির ইমাকে জোরপূর্বক সিএনজি অটোরিকশায় উঠিয়ে তামিমের বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে ইমা বেগমের শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালায় তামিম। খবর পেয়ে ইমা বেগমের মা মেহেরজান তামিমের বাড়িতে পৌঁছে প্রাণপন চেষ্টা করে ইমাকে তামিম ও নাছিরের কবল থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন।
এসময় ইমা বেগমের পরনের কাপড় ছেড়া ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান মেহেরজান। ক্ষিপ্ত হয়ে তামিম বাহিনী মেহেরজানের বাড়ীতে এসে আক্রমন চালায়। হামলায় আহত হন- নানু মিয়ার ছেলে আমান ও জামান, মৃত গেদন আলীর ছেলে রাজন ও রিপন, চুনু মিয়ার স্ত্রী মুন্না বেগম, টুটন মিয়ার স্ত্রী রুমানা আক্তার। আহতরা নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে মুহিবুর রহমানের ছেলে নাদির, মৃত ছমির মিয়ার ছেলে মুহিবুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের স্ত্রী রাজনা বেগম মেহেরজানের বসত ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে পরিবারের সবাইকে এলোপাতাড়ি মারপিঠ করে ইমা বেগমের বিয়ের জন্য জমানো নগদ ২ লক্ষ টাকা ও ৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার যার আনুমানিক মূল্য দেড় লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন বিধবা মেহেরজানকে থানায় মামলা মোকদ্দমা করলে শান্তিতে থাকতে দেবে না বলেও শাসিয়ে যায়।
এদিকে মাদ্রাসা ছাত্রী ইমা বেগম বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৩নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আলমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আব্দুস শহিদ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। শেখপাড়া এলাকায় মারামারির ঘটনা স্বীকার করে এসআই শহীদ বলেন, ঐ গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মাদ্রাসা ছাত্রী ইমা বেগমের উপর নির্যাতনের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমি সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ঘটনার খবর পেয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) অপূর্ব শাহা মেহেরজানের বসত ঘর পরির্দশন করেছেন। এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মেহেরজান।