ঢাকাস্থ ইতালীয়ান দূতাবাসের বিরুদ্ধে রোম ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের

Image - Rome TRIBUNAL - Case against ITALIAN Embassy in  Dhaka - 02মাঈনুল ইসলাম নাসিমঃ অবশেষে আদালতে গড়িয়েছে ঢাকাস্থ ইতালীয়ান দূতাবাস ও তাদের নিয়োগকৃত ভিসা-এজেন্সি ভিএফএস গ্লোবালের স্ক্যান্ডাল। বাংলাদেশ ও ইতালী উভয় দেশে আদালতের শরণাপন্ন হবার অংশ হিসেবে ১৬ জুলাই ২০১৫ রোম ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১৯৯২ সালে রোমে প্রতিষ্ঠিত ইতাল-বাংলা এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ মোহাম্মদ তাইফুর রহমান কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় ‘বিবাদী’ করা হয়েছে ইতালীয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, ঢাকাস্থ ইতালীয়ান দূতাবাস এবং ভিএফএস গ্লোবালকে। ইতালীর আইনে বিধি মোতাবেক ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অফিসে ইতিমধ্যে মামলাটি গৃহীত হয়েছে।
দায়েরকৃত এই ঐতিহাসিক মামলার অভিযোগনামায় বলা হয়েছে, ফ্যামেলি রি-ইউনিয়ন, পড়াশোনা, কাজ বা কোর্স সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে যারা বাংলাদেশ থেকে ইতালীতে এসে থাকেন, ভিসার জন্য তাদেরকে সরাসরি ঢাকার গুলশানস্থ ইতালীয়ান দূতাবাসের ভিসা সেকশানে যাবার কথা থাকলেও অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবাইকে যেতে হয় দূতাবাসের নিয়োগকৃত এজেন্সি ভিএফএস গ্লোবালের বনানীস্থ রাসেল পার্কে। ভিসা আবেদনকারীদের জন্য ২০১২ সাল থেকে অনলাইনে আবেদন করার বাধ্যবাধকতা চালু করে ভিএফএস গ্লোবাল, যা মূলতঃ পরিণত হয় নিরীহ বাংলাদেশীদের গলাকাটার ‘ইনস্ট্রুমেন্ট’ হিসেবে।
অনলাইনে ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ পাওয়া না গেলেও ভিএফএস-এর মাফিয়া সিন্ডিকেট যেভাবে রমরমা ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ বানিজ্য খুলে বসেছে, তার আদ্যোপান্ত স্থান পেয়েছে মামলার নথিপত্রে। রোম ট্রাইব্যুনালে গৃহীত মামলায় প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণাদি সহ সুষ্পষ্টভাবে আরো বলা হয়েছে, গত ৪ বছরে কম করে হলেও প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশী ঢাকাস্থ ভিএফএস গ্লোবালের শোষণের শিকার হয়েছে, যাদের কাছ থেকে দুর্নীতিবাজ এই প্রতিষ্ঠানটি জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। ভিএফএস গ্লোবালের যাবতীয় অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে বিগত বছরগুলোতে বহুবার ইতালীয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এবং ঢাকাস্থ ইতালীয়ান দূতাবাসে অফিসিয়ালি নালিশ জানানো হলেও অদ্যবধি কারো টনক নড়েনি।
মামলার ‘বাদী’ ইতাল-বাংলা এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ মোহাম্মদ তাইফুর রহমান এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, নিরীহ বাংলাদেশী নাগরিকদের স্বার্থরক্ষায় অচিরেই ঢাকার আদালতেও মামলা দায়ের করা হচ্ছে। প্রয়োজনে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতেরও শরণাপন্ন হবেন বলে জানান তিনি। দেশ-বিদেশের পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত, সদ্য পূর্ণ মন্ত্রী হওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং নতুন দায়িত্ব নেয়া প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি একটু আন্তরিক হলেই ভেঙ্গে দিতে পারেন ভিএফএস গ্লোবালের বনানীস্থ রাসেল পার্কের মাফিয়া সিন্ডিকেট। এদিকে “অবৈধ কর্মকান্ড কেন বন্ধ করা হবে না”- এই মর্মে ঢাকার উচ্চ আদালতে ‘রিট’ আবেদনও করা হতে পারে বলে জানা গেছে।