আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানীদের খপ্পরে সিলেটের বাহরাইন প্রবাসী : পথে বসেছে পরিবারে ১০সদস্য
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানীর খপ্পরে পড়ে অবুঝ শিশুদের নিয়ে সিলেটে রাস্তায় বসেছেন এক প্রবাসীর বধু। বিচার চেয়ে সমাজপতিদের দ্বারেদ্বারে ঘুরে উল্টো শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি ওতার স্বজনরা। প্রাণভয়ে এখন ভবঘুরে দিনযাপন করছেন তারা। তিনি ও তার পরিবারের নিরাপত্তাসহ চোরাচালানীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকার কর্তৃপক্ষের কাছে আকুতি করেছেন। শনিবার দুপরে সিলেট জেলা প্রেসকাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাদেপাশা ইউনিয়নের বাগলা মাইজপাড়ার প্রবাসী বশির আহমদের স্ত্রী আফিয়া খানম এ আকুতি জানান ।
আফিয়া খানম অভিযোগ করেন, তার স্বামী বশির আহমদ দীর্ঘ প্রায় ১৫ বৎসর থেকে বাহরাইনে থাকেন। তার কষ্টার্জিত উপার্জনের টাকায় ১০ সদস্যের পরিবারের ব্যয়ভার নির্বাহ করা হয়ে থাকে। বশীর আহমদ চার মাসের ছুটি নিয়ে এ বছরের ১৩ মার্চ দেশে আসেন। গত ১৩জুলাই বাহরাইনের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পূর্বমুহুর্তে তাদের অজান্তেই আন্তর্জাতিক চোরাকারবারী দলের সক্রিয় সদস্য সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লামাচন্দরপুর গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন তাকে ফোনে তার ভাই আজাদ উদ্দিনের কাছ থেকে একটি হারমোনিয়াম নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। বশীর আহমদ প্রথমে অসম্মতি জানালেও পরে ফরিদ ও তার স্বজনদের অনুনয় বিনয়ে হারমোনিয়ামটি নিয়ে যেতে সম্মত হন। ফরিদের ভাই আজাদ উদ্দিনসহ তার স্বজনরা একটি কার্টুনে প্যাক করে হারমোনিয়মটি নিয়ে তাদের বাড়িতে আসলে বশীর মিয়া সরলমনে তা নিয়ে ঢাকা থেকে ১৪জুলাই বাহরাইন রওয়ানা দেন। কিন্তু হারমোনিয়ামের ভেতরে মাদক তথা গাঁজা রয়েছে এমনটা আদৌ জানতেন না তিনি । বাহরাইন এয়ারপোর্ট পৌছার পরই কাষ্টমে বশীর আহমদকে আটক করে জেলে নিয়ে যায় সেখানকার পুলিশ। বর্তমানে তিনি ্আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানী ফরিদ ও আজাদের প্রতারনায় বাহরাইনের জেলে রয়েছেন। আর চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দেশে থাকা তার পরিবার ও স্বজনদেরন। এ নিয়ে গ্রামে কয়েকবার সালিশ বসলেও হাজির হয়নি চোরাচালানী আজাদ ও তার ভাই-বোনেরা। উপরন্তু গত ২৩ জুলাই প্রবাসী বশীর আহমদের পরিবারকে আলোচনার কথা বলে বাড়িতে নিয়ে মারপিট করে গুরুতর জখম করে এবং হত্যা ও গুম করে ফেলার হুমকি দেয় আজাদ ও তার লোকজন। আফিয়া জানান, আজাদ ও ফরিদ আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানীর সাথে জড়িত বলে তারা আগে জানতেন না। এঘটনার পর খোজ নিয়ে জানতে পারেন যে, আজাদ ও তার পরিবারের লোকজন আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানী। প্রায় ৯মাস আগে আজাদ বাহরাইনে মাদকের চালানসহ ধরা পড়ে আজাদ। কয়েক মাস জেলে থাকার পর তার ভিসা বাতিল করে বাহরাইন সরকার তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। তার ভাই মাদক চোরাচালানী ফরিদ এখনো বাইরাইনে থাকায় প্রতারনার মাধ্যমে মাদক পাচার করছে। আর তাদের এ প্রতারনার শিকার হয়ে সর্বনাশ ঘটেছে সরলমনা প্রবাসী বশীর ও তার পরিবারের । প্রবাসী বশীরের বধু আফিয়া তার স্বামীসহ পরিবারে এ করুন দশার জন্য দায়ী মাদক চোরাচালানী আজাদ ফরিদসহ তাদের লোকদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীসহ বর্তমান সরকার কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বি কফিল উদ্দিন খান,হাজি ইসলাম উদ্দিন, তোতা মিয়া,মুস্তাক মিয়া,সুহের আহমদ এবং প্রবাসী বশীর আহমদের ছেলে হাফিজুর (১০) ও মিনহাজ(৬)।