বৃষ্টিতেই ভেঙ্গে পড়লো খোয়াই নদীতে দেয়া বিতর্কিত সেই বাঁধ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ হবিগঞ্জের শাহজিবাজারে নির্মাণাধীন বৈদ্যুতিক প্লান্টে ভারি মালামাল পরিবহনের জন্য হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজের পাশে খোয়াই নদের উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধ সামান্য বৃষ্টিতেই ধ্বসে পড়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে এ ধ্বসের ঘটনা ঘটে। রোববার সকাল থেকে আবারো শুরু হয়েছে বাঁধের নির্মাণ কাজ। কিন্তু বাঁধের নির্মাণ কাজে আতঙ্কে রয়েছেন নদের উভয় পাড়ের মানুষজন।
জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর থেকে ৩৩০ মেগাওয়াট শাহজীবাজার পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খোয়াই নদের উপর দিয়ে ১২০ চাকার ট্রাকে করে ২২০ মেট্রিক টন ওজনের জেনারেটর পরিবহনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু নদের উপর নির্মিত ব্রীজ দিয়ে এতো ভারী মালামাল পরিবহন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবান্ট লজিস্টিক কারো অনুমতি না নিয়েই নদের মাঝ বরাবর বাঁধ নির্মাণ শুরু করে। গত ২৬ মে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে প্রশাসন বাঁধের নির্মাণ কাজ স্থগিত করেন। ২৮ মে জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নদীতে অবৈধ বাঁধ দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এটি অপসারণের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
পরে ৭ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শাহজিবাজারে ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুত পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ও খোয়াই নদের শায়েস্তাগঞ্জ ব্রিজের ৫০ মিটার ডাউন স্ট্রীমে অস্থায়ী বাইপাস/ক্রস ড্যাম নির্মাণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় শর্তসাপেক্ষে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে মালামাল পরিবহনের অনুমতি দেয় প্রশাসন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পর খোয়াই নদে পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে জেলায় বন্যা দেখা দিলে এবং হবিগঞ্জবাসী ক্ষতির সম্মুখীন হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবান্ট লজিস্টিক ক্ষতিপূরণ দেবে। এ বিষয়ে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। প্রশাসনের সাথে লিখিত চুক্তির পর আবারও কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি রেখে কাজ করলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশংকা থেকেই গিয়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত শুরু হলে খোয়াই নদে পানি বৃদ্ধি পায়। এতেই অস্থায়ী বাঁধ ধ্বসে পড়ে। ফলে ওই এলাকায় বাঁধের মাটি নদে মিশে নাব্যতা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। তবে রক্ষা পেয়েছেন বাঁধের উজানে থাকা লোকজন। বাঁধ ধ্বসে না পড়লে পানি উপচে এলাকায় বন্যা দেখা দেয়ার আশংকা ছিল বলে দাবি করছেন স্থানীয় লোকজন। ভবিষ্যতে এরকম বৃষ্টি হলে বা উজান থেকে পানি নামলে তাদের এ আংশকা বাস্তবে রূপ নিতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম জানান, বৃষ্টিপাতের ফলে খোয়াই নদে ৭.৬ মিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। যদি ভারত বা উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামে তবে পানির প্রবাহ ৯ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।