ছাত্রীকে ধর্ষণ শেষে হাতে ৫শ টাকা ধরিয়ে দিল শিক্ষক !

rapedসুরমা টাইমস ডেস্কঃ প্রায় দেড় মাস আগে বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে নিয়ে গিয়ে ফেরার পথে এক ছাত্রীকে কৌশলে ধর্ষণ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। পরে ধর্ষিতর হাতে পাঁচশ টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। খুবই দরিদ্র পরিবারের ওই মেয়েটি এরপর থেকেই বিদ্যালয়ে যেতে অনীহা প্রকাশ করে। এতদিন পর শিশুটির কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারে পরিবারের সদস্যরা।
গত পহেলা বৈশাখে এ ঘটনা ঘটে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার মিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
প্রায় দেড় মাস পর ছাত্রীর রিকশাচালক বাবা ফরিদগঞ্জ থানা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ২১ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। পরদিন ২২ মে আদালতে মেয়েটির জবানবন্দি নেয়া হয়।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আব্দুস সালাম। তিনি মিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক। মামলা দায়ের পর থেকে শিক্ষক আব্দুস সালাম পলাতক রয়েছেন।
এদিকে ঘটনা তদন্তে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কবির আহম্মদকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলা নববর্ষের বর্ষবরণ উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য মিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে ফরিদগঞ্জে নিয়ে আসেন সহকারী শিক্ষক আব্দুস সালাম। অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে বিদায় করে দিয়ে চতুর্থ শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে সুকৌশলে উপজেলা সদরে তার বাসায় নিয়ে যান। এরপর ধর্ষণ করে ঘটনা ফাঁস না করতে পাঁচশ টাকা দিয়ে বিদায় করেন ওই শিক্ষক।
এরপর থেকে মেয়েটি বিদ্যালয়ে যেতে অনীহা প্রকাশ আসছিল। এক পর্যায়ের তার হতদরিদ্র পরিবারের লোকজন ঘটনা জানতে পারে। এরপর বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানালে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে মেয়েটির বাবা থানা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির পরিবার, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ১৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।
ফরিদ উদ্দিন আরো জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক বর্তমানে বিনা অনুমতিতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।
অপরদিকে, ঘটনা তদন্তে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কবির আহাম্মদকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। গত ২৬ মে ওই কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানান, ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।