অনন্ত হত্যা মামলা : ১৩ দিন পর সিআইডিতে স্থানান্তর
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ পূবালী ব্যাংক’র জাউয়াবাজার শাখার কর্মকর্তা, মুক্তমনা ব্লগের অন্যতম ও বিজ্ঞান লেখক ও মুক্তমনা ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার ১৩ দিন পর তদন্তে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ১৩ দিনে পুলিশের তদন্তের গতি নিয়ে নানান অভিযোগ আসছিল। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) রহমতউল্লাহ জানান, অনন্ত বিজয়ের মামলাটি আজ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ১২ মে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে অনন্ত বিজয় দাশ তাঁর কর্মস্থল পুবালী ব্যংকে যাওয়ার পথে বাসা থেকে কয়েকশ’ মিটার অদূরে সিলেট শহরের সুবিদবাজার এলাকার বনকলাপাড়ায় জঙ্গি সন্ত্রাসীদের চাপাতির আঘাতে খুন হন। সন্ত্রাসীরা তাঁর মাথায় এলোপাথাড়ি কুপাতে থাকলে ঘটনাস্থলে মগজ ছিটকে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে বরাত দিয়ে একজন পথচারী জানান, খুনিরা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর এলাকা ত্যাগ করে।
অনন্ত খুন হবার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই হত্যার দায় স্বীকার করে আনসার বাংলা-৮ নামের একটি টুইটার একাউন্ট। সেখানে দাবি করা হয়। অনন্তকে তারাই হত্যা করেছে, নিজেদের আল-কায়েদার উপমহাদেশীয় সহযোগী দাবি করে তারা।
নিহতের ভাই রত্নেশ্বর দাশ ঐদিনই সন্ধ্যায় বাদি হয়ে বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু হত্যার ১৩ দিন পরও পুলিশ কাউকেই আটক করতে পারেনি। দিতে পারেনি কোন অগ্রগতির খবর। অগ্রগতি হচ্ছে না এ কথা স্বীকারও করে নেন পুলিশ কর্তারা। তারা জানান পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট না থাকার ফলে এই ধরনের জটিল মামলার তদন্তে তারা কোন কূল কিনারা করতে পারছেন না।
কার্যত তদন্তে ব্যর্থ হয়েই সিআইডি’র কাছে মামলাটি সিআইডি’র কাছে হস্তান্তর করল পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর খুনিদের ধরতে পুলিশের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন অনেকেই। প্রায় প্রতিদিনই অনন্ত বিজয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। একই দাবিতে আগামী ২৬ মে (মঙ্গলবার) প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলসমূহ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে। সিলেটে গণজাগরণ মঞ্চ, নাট্য পরিষদ, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন খুনিদের গ্রেফতার দাবিতে সিলেটে একের পর কর্মসূচি পালন করে আসলেও খুনীদের ধরা তো দূরের কথা কোন ক্লুই বের করতে পারেনি ঘটনার তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ।
এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। সংস্কৃতিকর্মী, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সিলেট অনুষ্ঠেয় প্রাক বাজেট আলোচনায়ও বাজেট ছাপিয়ে অনন্তের খুনীদের গ্রেফতার না করার ক্ষোভ প্রকাশ করেন খোদ সরকারদলীয় সাংসদ কেয়া চৌধুরী।
আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এক আলোচনা সভায় বলেন- তারা প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে তরুন লেখক অনন্তকে হত্যা করে পালিয়ে গেল আর আমরা স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র , এত রাষ্ট্র দিয়েও কিছুই করতে পারলাম না।