“কুত্তা ফাইল” নিয়ে সিলেট পাসপোর্ট অফিসে হুলস্থুল কান্ড : ডিডি বললেন “স্যরি”
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ নগরীর দক্ষিণ সুরমার আলমপুরস্থ বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক অবশেষে “স্যরি” বলে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। বৃহস্পতিবার গ্রাহক এক সাংবাদিকের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও অপ্রীতিকর ঘটনার পর অবশেষে ডিডি সাংবাদিকদের “স্যরি” বলে ক্ষমা প্রার্থনা ও পরিস্থিতি শান্ত করেন ।
জানা যায় , বৈশাখী টেলিভিশনের সিলেট ব্যুরো প্রধান ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন শিহাবের এক চাচা আবুল কালাম মধ্যপ্রাচ্যে গমনের জন্য গত তিন মাস পূর্বে (এম আর পি) পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। গত ১০ মে আবুল কালামকে পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য এসএমএস দেয়া হলেও তিনি ঐ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষ করেও পাসপোর্ট পাননি। একই দিন সন্ধ্যা বেলা অফিসের এক কর্মককর্তার কাছে পাসপোর্ট চাইলে তিনি পাসপোর্টে প্রদানের মূল রিসিটি রেখে হাতে লেখা একটি রিসিট দিয়ে পরে আসতে বলেন।
গত ১১ মে আবুল কালাম এনালগ পাসপোর্ট নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য চলে যান। যাবার সময় তাঁর ভাতিজা সাংবাদিক শিহাবকে হাতের লেখা রিসিটি দিয়ে এমআরপি পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য বলে যান। শিহাব বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় হাতে লেখা রিসিট নিয়ে দেখা করেন বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক আব্দুল্লা আল মামুনের সাথে। ডিডি মামুন শিহাবকে বলেন এই রিসিট দিয়ে পাসপোর্ট দেয়া যাবে না মূল কম্পিউটার লেখা রিসিট লাগবে। শিহাব তখন মূল রিসিটি ঐ অফিসের এক কর্মকর্তার কাছে আছে বলে জানান। কিন্তু ডিডি শিহাবকে পূনরায় এ ব্যাপারে কোন কথা না বলে থানায় জিডি করে কপি নিয়ে আসতে বলেন। তখন দু-জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় । এবং ডিডি শিহাবকে অপমান করেন ও অসংলগ্ন কথা বার্তা বলে অসৌজন্য মূলক আচরণ করেন। শিহাব অফিস থেকে বেরিয়ে এসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সিলেটের সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করেন। খবর পেয়ে ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়ার বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ’র স্থানিয় কয়েকজন নেতা জড়ো হন পাসপোর্ট অফিসের সামনে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডিডি শিহাবের এমআরপি পাসপোর্টটি ঐ অফিসের এক দালালের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন ।
এসএমপি’র আলম পুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জয়ন্ত দাশ’র নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছান এবং পাসপোর্ট অফিসের প্রধান ফটকসহ সকল ফটক বন্দ করে দেন। সাংবাদিকরা পুলিশের মাধ্যমে ডিডি’র সাথে দেখা করার খবর পাঠালে ডিডি দু-তলা থেকে নেমে নিচ তলায় সাংবাদিকদের সামনে আসেন। এ সময় স্থানিয় আওয়ামী লীগ নেতা ইরান, ছয়েফ খান ,কয়েছ ও যুবলীগ নেতাসহ অনেক নেতা কর্মী সেখানে যান। ডিডি এসময় আওয়ামী লীগ নেতাদের দেখে চলে যাওয়ার জন্য ধমক দিয়ে বললে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতারা অপমানিত হয়ে স্থান ত্যাগ করেন। পরে ডিডি উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে শিহাবের সাথে আচরণের জন্য “স্যরি” বলেন এবং পরিস্থিতি শান্ত হয় ।
এদিকে ‘কুত্তা ফাইল’ সম্পর্কে শাহাব উদ্দিন শিহাব জানান, বৃহস্পতিবার পাসপোর্ট চাইতে গেলে ডিডি তার অধীনস্থ এক কর্মকর্তাকে উক্ত পাসপোর্ট অনুসন্ধান করতে বলেন। কিছুক্ষণ পর ঐ কর্মকর্তা শিহাবের সামনে ডিডিকে এসে বলেন “স্যার এটা কুত্তা ফাইলের পাসপোর্ট ”। এর পরই ডিডি মামুন শিহাবের কাছে পাসপোর্ট দিতে নানা টাল বাহানা শুরু করেন ।
উল্লেখ্য, তাৎক্ষনিকভাবে অনুসন্ধানে কুত্তা ফাইল সম্পর্কে জানা যায়, যে সকল পাসপোর্ট কোন উৎকোচ ছাড়া অতি সাধারণভাবে সরবরাহ করা হয় সেটাকে পাসপোর্ট অফিসের বাসায় “কুত্তা ফাইল” পাসপোর্ট বলা হয়। এই ফাইলের অর্ন্তভুক্ত পাসপোর্ট গুলো মাসের পর মাস ধরণা দিয়েও সংগ্রহ করা যায় না বলে জানা গেছে । অপর দিকে অবৈধ টাকা পরিষোধ করে যে ফাইল আনা হয় তাকে ‘চ্যানেল ফাইল’ বলে উল্লেখ করা হয়।