সিলেট সংস্কৃতি কেন্দ্রের বালাকোট দিবসের আলোচনা সভা

আধিপত্যবাদী ও সাম্রজ্যবাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধই হলো বালাকোট শহীদদের প্রকৃত চেতনা

Sylhet Sangskrity Kendro Balacourt Dibos Programme Photo-06-05-15ঐতিহাসিক বালাকোট দিবসের আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, পাক-ভারত উপমহাদেশে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ’শ বছর মুসলিম শাসনের পর ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ক্ষমতা গ্রহণের মধ্যদিয়ে মুসলমানদের পতন হয়। ইংরেজরা ক্ষমতায় গিয়ে মুসলমানদের চরম অত্যাচার নির্যাতন ও জুলুম শুরু করে। মুলমানরা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আন্দোলন শুরু করে। তাদের আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল একদিকে কুসংস্কার পূর্ণ সমাজ সংস্কার ও প্রকৃত ইসলামের আলোকে মুসলমানদের মন-মানসিকতা গড়ে তোলা, অপরদিকে মুসলমানদের অস্তিত্ব, প্রভাব প্রতিপত্তি ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা। তখনই এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে স্বার্থবাদী গোষ্ঠী বিরোধিতা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় সাইয়্যেদ আহমদ বেরলভী ১৮২৯ সালে শিখদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন। তিনি ১৮৩০ সালে ভারতের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে ইসলামী রাষ্ট্রের আদলে একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এর বিরুদ্ধে শিখ, মারাঠা এবং ইংরেজ ত্রিপক্ষীয় ষড়যন্ত্র শুরু করে। ১৮৩১ সালের ৬ মে বালাকোটের প্রান্তরে শিখসহ অন্যান্যের সাথে জেহাদে সাইয়্যেদ আহমদ, শাহ ইসমাইল ও সাইয়্যেদ আহমদ বেরলভীসহ ১৩৫ জন মুজাহিদ শাহাদাত বরণ করেন। আজও ইসলাম, মুসলমান ও ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী শক্তির বহুমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। আধিপত্যবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলাই হলো বালাকোটের শহীদদের প্রকৃত চেতনা।
গতকাল বুধবার ঐতিহাসিক বালাকোট দিবস উপলক্ষ্যে সিলেট সংস্কৃতি কেন্দ্র আয়োজিত আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। সিলেট সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যক্ষ কবি আবুল কালাম আজাদ-এর সভাপতিত্বে ও সমন্বয় কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম খান-এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট সংস্কৃতি কেন্দ্রের পরিচালক জাহেদুর রহমান চৌধুরী। হাফিজ হাবীবুল্লাহ’র পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সুচীত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফয়জুল হক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট ওয়েষ্ট পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, অধ্যাপক কবি বাছিত ইবনে হাবীব, প্রভাষক কবি নাজমুল আনসারী, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার আহমদ মাহবুব ফেরদৌস, লেখক মুলতাজিম আলী বখতিয়ার। ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গিকার শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে কবি কালাম আজাদ বলেন, আমাদের তরুন প্রজন্ম ইসলামের সেই সাহসী সংগ্রামের ইতিহাস আজ ভুলতে বসেছে। এদেশের ইসলাম ও ইসলামী বর্তমানে নেতৃত্ব চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। তরুন প্রজন্মের মধ্যে বালাকোটের চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে শোষনবিহীন ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি