প্রতীকেও ইলিশ নিয়ে ‘কাড়াকাড়ি’
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে চড়েছে ইলিশের দাম; তার ছোঁয়া যেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা মেয়র প্রার্থীদের প্রতীক বাছাইয়েও। নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে জাতীয় মাছ ইলিশ পেতে আগ্রহী একাধিক মেয়র প্রার্থী। টেবিল ঘড়িও একাধিক মেয়র প্রার্থীর পছন্দের তালিকায় রয়েছে বলে নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শুক্রবার সকালেই সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক দেবেন। সেক্ষেত্রে প্রার্থীর পছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। তবে কোনো প্রতীক একাধিক প্রার্থীর পছন্দে থাকলে কাকে সেটা দেওয়া হবে তা ঠিক হবে লটারিতে।
প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্রে ইলিশ মাছ ও টেবিল ঘড়ি প্রতীক চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।
মনোনয়নপত্রে মেয়র, কাউন্সিলর পদে পছন্দের একটি প্রতীকের নাম দেওয়ার বিধান রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নির্বাচন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের পছন্দের প্রতীক ইলিশ মাছ। প্রয়াত বাবা মাছ প্রতীকে মেয়র হওয়ায় হানিফপুত্রেরও ইলিশই পছন্দ।
এই সিটি করপোরেশনে খোকনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের পছন্দেও রয়েছে ইলিশ। সঙ্গে টেবিল ঘড়ির কথাও বলেছেন তিনি।
ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হকের পছন্দের প্রতীক টেবিল ঘড়ি। এই সিটিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত তাবিথ আউয়ালও প্রতীক চেয়েছেন টেবিল ঘড়ি। এখানেও ইলিশ মাছ প্রতীক চেয়েছেন একাধিক মেয়র প্রার্থী।
জাতীয় পার্টির বাহাউদ্দিন আহমেদ, বিকল্পধারার মাহী বি চৌধুরী ও জাসদের নাদের চৌধুরী প্রতীক হিসেবে ইলিশ মাছের কথা মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করেছেন বলে এক নির্বাচন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত কে কোন প্রতীক বরাদ্দ পান তা-ই এখন দেখার বিষয়।
ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে ইলিশ নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে। এরপরেই টেবিল ঘড়ির চাহিদা।
“শেষ পর্যন্ত লটারিই একমাত্র ভরসা হবে। বিধি অনুযায়ী, প্রার্থীর পছন্দ বিবেচনা নিয়েই প্রতীক দেবেন রিটার্নিং অফিসার। তবে একই প্রতীকের দাবিদার বেশি হলে লটারিতে তা নির্ধারণ হবে।
প্রতীক বরাদ্দে রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”
ঢাকা উত্তরে হাতি প্রতীক চেয়েছেন সিপিবির আব্দুল্লাহ আল ক্কাফি রতন ও বিএনএফের এ ওয়াই এম কামরুল ইসলাম। আর ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী চান বাই-সাইকেল।ঢাকা উত্তরে এবার ১৬ জন ও দক্ষিণে ২০ জন এবং চট্টগ্রামে ১২ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন মেয়র পদের জন্য ১২টি প্রতীক রাখলেও প্রার্থী বেশি হওয়ায় এবার অতিরিক্ত ১২টি প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসাররা প্রার্থীদের নামের প্রথম অক্ষর অনুসারে তালিকা করে পছন্দের প্রতীক সাজিয়ে রেখেছেন। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব সামসুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুক্রবারসকালেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবেন রিটার্নিং অফিসার। সংরক্ষিত প্রতীক বরাদ্দ শেষে অতিরিক্ত প্রতীক থেকে অন্যদের বণ্টন করা হবে।”
বিধিমালায় সিটির কর্পোরেশনের মেয়র পদের জন্য সংরক্ষিত ১২টি প্রতীক হল- কমলালেবু, ক্রিকেট ব্যাট, চরকা, টেবিল ঘড়ি, টেলিস্কোপ, ডিস এন্টেনা, দিয়াশলাই, ফ্লাক্স, বাস, ময়ূর, হাতি ও ইলিশ মাছ।
প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় মেয়র পদের জন্য অতিরিক্ত যে ১২টি প্রতীক রাখা হয়েছে সেগুলো হলো- টেবিল, মগ, লাউ, ল্যাপটপ, আংটি, ঈগল, কলমদানি, কেক, চিতাবাঘ, জাহাজ, শার্ট ও সোফা।
আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ভোট সামনে রেখে শুক্রবার প্রতীক নিয়েই ভোটারদের দ্বারে যাবেন প্রার্থীরা।