সংখ্যালঘু শব্দ ব্যবহার করে প্রশাসনিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত কলিন্দ্র সরকার
সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ কুচক্রি মহলের ইন্দনে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে সংখ্যালঘু শব্দ ব্যবহার করে প্রশাসনিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার দোলার বাজার ইউনিয়নের মামলাবাজ কলিন্দ্র সরকার । কলিন্দ্র একের পর এক মামলা দিয়ে একটি নিরীহ পরিবারকে হয়রানীর পাশাপাশি তাদের অর্ধকোটি টাকার সম্পদ দখল করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। হয়রানীর শিকার রাউলী গ্রামের সানজাব আলীর ছেলে জুনেদ আহমদের পরিবার। আদালতের রায় ডিগ্রী ঐ পরিবারের পক্ষে ঘোষনা করায় ভূমিখেকোরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জালিয়াতরা অসহায় পরিবারের ক্রয়কৃত বসতবাড়ি দখলের জন্য পর পর দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী অব্যাহত রেখেছে। ১ এপ্রিল বুধবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপরোক্ত অভিযোগ করেন জুনেদ । লিখিত বক্তব্যে জুনেদ বলেন, তিনি মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিবিএ (অনার্স) ১ম বর্ষের ছাত্র ও তার বড় ভাই শাহীন আহমদ ও মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিবিএ (অনার্স) ১ম বর্ষের ছাত্র। লেখাপড়ার সুবিধার্থে সিলেট নগরীতে একটি ভাড়া বাড়িতে দুই ভাই ও মাকে নিয়ে তারা বসবাস করছেন। জুনেদের চাচা মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী তেরাব আলী, আলতাব আলী এবং বড় চাচা মোস্তাব আলী সহ তাদের পরিবার গ্রামে বসবাস করছেন। হাই কোর্ট সিভিল ডিভিশন এর ২৩৭৯ নং মামলার রায় ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর তাদের পক্ষে রায় ঘোষণার পর গ্রামের কলিন্দ্র সরকার ও তার ভাতিজা পবিত্র সরকার দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে জুনেদের পরিবারকে হয়রানী করছে। গ্রামের মৃত লোকরাম নমসুত্রের কণিষ্ঠ পুত্র কলিন্দ্র সরকার ও তার ভাইয়েরা পৈত্রিক বসতবাড়ি অনেক বছর আগেই বিক্রি করে। রসময় নমসুত্রের কাছ থেকে মোবাশ্বীর আলীর ক্রয়কৃত বাড়িতে ঘর নির্মাণ করে আশ্রিতা হিসেবে বসবাস করতো। পরবর্তীতে জনৈক খালিছ মিয়া বাড়ী ক্রয় করলে কলিন্দ্র সরকার গংরা বিপাকে পড়ে। তাদের নিরাশ্রয়ের কথা বিবেচনা করে মোবাশ্বীর আলীর উত্তরসুরীরা পার্শ্ববর্তী অপর একটি বাড়িতে থাকার অনুমতি দেন। পরবর্তীতে এ বাড়িটি ও বিক্রি করে দেন জুনেদের পরিবারের কাছে। এ ভূমির মূল মালিক মৃত মোবাশ্বির আলীর স্ত্রী নূরজাহান বেগমের কাছ থেকে ১৯৯৮ সালের ২০ আগস্ট ৫১৬৭ নং দলিল এবং মনোহর আলীর কন্যা জলিখা খাতুনের কাছ থেকে ১৯৯৮ সালের ১৪ জুলাই ৪৩২৪ নং দলিল ৪৭ শতক ভূমির খরিদ সূত্রে মালিক হন জুনেদের পিতা মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী সানজাব আলী, চাচা তেরাব আলী, আলতাব আলী ও বড় চাচা মোস্তাব আলী। কলিন্দ্র সরকার জুনেদের চাচা মোস্তাব আলীর কাছে কাকুতি-মিনতি করলে এ সময় অন্যত্র যাবার শর্তে মানবিক চিন্তা করে থাকার মৌখিক অনুমতি দেন। বাড়িতে থাকার সুবাদে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চতুর কলিন্দ্র সরকার মালিক কর্তৃক এ বাড়িতে বিক্রির আগেই তার নামে ১৯৯৫ সালের ৭৩৮৯/৯৫ নং দলিল সৃষ্টি করে রাখে। নিমাই রায় নমসুত্র , জ্ঞান রায় নমসুত্র ও রাধা রাম নমসুত্র ভূমির মালিক হিসেবে কলিন্দ্র সরকার গংদের নামে দানপত্রের একটি মিথ্যা রেজিস্ট্রী দেখিয়ে ৮৩৮৯ নং দলিল মূলে ভূমির মালিকানা দাবী করে আসছে। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে দু’ পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গ্রাম্য সালিশে উচ্চ আদালতে দারস্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। উভয় পক্ষকে রায় না পাওয়া পর্যন্ত নিরব থাকার পরামর্শ দেন, জুনেদের চাচা মোস্তার আলী দলিল রেকর্ডির মালিক নয়- এ মর্মে এ দলিল চ্যালেঞ্জ করে আদালতে স্বত্ব মামলা দায়ের করলে ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর মহামান্য হাই কোর্ট বিভাগ কলিন্দ্র সরকারের সৃষ্ঠ দলিলটি সঠিক নয় বলে জুনেদের পক্ষে রায় ঘোষণা করেন। উচ্চ আদালতে কোন সঠিক কাগজ পত্রাদি দেখাতে পারেনি কলিন্দ্র সরকার । এদিকে সুনামগঞ্জ আদালতে কলিন্দ্র সরকার সহ চার জনের বিরুদ্ধে জাল দলিল মামলা বিচারাধীন। এ মামলায় দলিল লেখক ক্ষিতিশ পাল এক সপ্তাহ জেল খাটতে হয়েছে। আদালতে পরাজিত হওয়ার পর কলিন্দ্র সরকার গংরা নানা অজুহাতে কালক্ষেপন করতে থাকে। গত ২১ মার্চ স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়ে কলিন্দ্র সরকার গংরা নারী-পুরুষ নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। এ ঘটনাকে অতিরঞ্জিত সংখ্যালঘু নির্যাতন বলে প্রচার করে ফায়দা লুটার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় তারা। আদালতে হেরে গিয়ে কলিন্দ্র সরকার তার ভাতিজা পবিত্র সরকার দিয়ে জুনেদ সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ছাতক থানায় দায়ের করে। মামলা নং ৩০, তাং ২৩/০৩/১৫। এলাকার কিছু কুচক্রি মহলের ইন্দনে মিথ্যা ঘটনা দিয়ে সংখ্যালঘু শব্দ ব্যবহার করে প্রশাসনিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় মামলাবাজ কলিন্দ্র সরকার । একটি মামলা জামিন নিতে না নিতেই কলিন্দ্র সরকার জুনেদ গংদের বিরুদ্ধে আরেকটি মিথ্যা হয়রানীমূলক মামলা করে। মামলা নং-৩৩, তাং ২৯/০৩/২০১৫। পুলিশ জুনেদসহ অন্যান্যদের হয়রানী করছে। মিথ্যা বিষয়টিকে নিয়ে একটি মহলের প্ররোচনায় সংখ্যালঘু নির্যাতন বলে জুনেদের পরিবারকে ফাসানোর প্রায়তারা করছে। দুটি মিথ্যা মামলার কারণে জুনেদের স্কুল পড়োয়া চাচাতো ভাই- বোনসহ নারী-পুরুষ সবাই ঘর বাড়ি ছাড়া। যে কোন সময় মামলাবাজ কলিন্দ্র সরকার গংরা জুনেদের বসত বাড়ির ভিটা দখল, ঘরের মূল্যবান সম্পদ সোনা-দানা সহ অর্ধকোটি টাকার সম্পদ দখল করার আশংকা করছেন। মামলার সঠিক তদন্ত,জান মালের নিরাপত্তার ও বসতবাড়িসহ সহায় সম্পত্তির রক্ষার জন্য বিভাগীয় কমিশনার ডি. আই. জি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও ছাতক থানার পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জুনেদ। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রাউলী গ্রামের সামাজিক সংগঠন লিটল সার্ভ ক্লাবের সভাপতি ও মদন মোহন কলেজের ছাত্র রাসেল আহমদ দীপু , নর্থইষ্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র মাজেদুল ইসলাম, মদন মোহন কলেজের ছাত্র সারোয়ার জাহান সুমন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এখলাছ মিয়া প্রমুখ।