বছরে ১০০ দিনের বেশি বিচার কাজ হয় না ॥ প্রধান বিচারপতি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ এখন থেকে আর কোন নতুন মামলা না নিলেও বিচারাধীন মামলা ১০০ বছরেও নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। বিচারকরা দুপুর বেলা খাবারের জন্য গেলে আর আসেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা বারের পক্ষ থেকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত ও প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, দেশে কয়েক লক্ষ মামলার জট রয়েছে। ওই মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য বিচারকদের আরো আন্তরিক হতে হবে। সারাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ ৭ হাজার ৮৬০ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এখন থেকে নতুন মামলা না নিলেও বিচারাধীন মামলা ১০০ বছরেও নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে না। মামলার বিচারকাজে গতি এনে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হলে বিচারক ও আইনজীবীদের আদালতে আরও বেশি সময় দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২১০-২১৫ দিন আদালতের কার্যক্রম চলে। কিন্তু হরতাল, অবরোধসহ নানা কারণে বাংলাদেশে বছরে ১০০ দিনের বেশি আদালতে বিচারকাজ হয় না। বিচারকরা ২ টার পর এজলাসে বসতে চান না, আইনজীবীরাও বিকেলে কোর্ট করতে চান না। বিচারকরা নিয়মিত বিচার কাজ করলে ৬০ ভাগ ও আইনজীবীরা সহযোগিতা করলে আরও ২০ ভাগ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।
এস. কে সিনহা বলেন, সারাদেশে ই-লাইব্রেরি চালু করা হবে। এর মাধ্যমে বিচারক ও আইনজীবীরা ঘরে বসে বিশ্বের সকল আইনের বই পড়ার সুযোগ পাবেন। দেশের সকল বিভাগে হাইকোর্টের একটি অস্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এটা হলে মানুষ আরও সহজে আইনীসেবা পাবে।
স্বাক্ষ্যগ্রহণের জটিলতার কারণে মামলায় যাতে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বাক্ষ্য গ্রহণেরও ব্যবস্থা করা হবে। এতে সময় নষ্ট হবে না। মামলাও দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ.কে এম শমিউল আলমের সভাপতিত্বে ও এডভোকেট মোস্তফা দেলওয়ারের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা ও দায়রা জজ খন্দকার কামাল উজ জামান, মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা, জেলা জজ কোর্টের পিপি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অশোক পুরকায়স্থ প্রমুখ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বারের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপ্রতি এস.কে সিনহাকে স্বর্ণের মেডেল উপহার দেয়া হয়।