নবীগঞ্জে রাস্তায় গাছ ফেলে সিরিজ ডাকাতির চেষ্টা : ৫ ডাকাত গ্রেপ্তার, গুলিবিদ্ধ ১
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ নবীগঞ্জ উপজেলার নবীগঞ্জ-আউশকান্দি সড়কের বাংলা বাজার ও কুর্শির মধ্যবর্তী স্থানে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে রাস্তায় গাছ ফেলে সিরিজ ডাকাতির কবলে পড়েন দু সংবাদকর্মীসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। ডাকাতদলের হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়ে পুলিশ এবং জনতার সহায়তায় আন্তঃজেলা ডাকাতদলের ৫ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে পালিয়ে যাওয়ার সময় ১ ডাকাতকে গুলিবৃদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার করেছে। গুলিবৃদ্ধ ডাকাতকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা হল, হাবিবুর রহমান (২৪) আবদুল অজুদ (৩০) সোহেল মিয়া (২৫) ,শাকিল আহমদ (২৫) এবং রুপন আহমদ (২৬)।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে উল্লেখিত সড়কের আজিজ হাবিব উচ্চ বিদ্যালয় এবং কুর্শি গ্রাম সংলগ্ন কেরোসিন বোমা নিক্ষেপের খবর পেয়ে কুর্শি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদ, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার এম এ বাছিত ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোঃ সরওয়ার শিকদারসহ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। সংগঠিত ঘটনায় আক্রান্ত বাস ও যাত্রীদের সাথে আলোচনা করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রাত প্রায় দেড় টার দিকে বাংলা বাজার থেকে প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোঃ সরওয়ার শিকদারের বাড়ী কুর্শি গ্রামে পৌছে দেয়ার জন্য চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদ তার প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে রওয়ানা দেন। পথি মধ্যে উপরে উল্লেখিত স্থানে পৌছা মাত্র ডাকাতদলের ফেলা গাছ দেখে গাড়ী দাড় করান।
এ সময় ৬/৮ জনের একদল অস্ত্রধারি ডাকাতদল হামলার চেষ্টা করলে বেক গেয়ার লাগিয়ে চেয়ারম্যান গাড়ী নিয়ে দ্রুতগতীতে পেছনের দিকে ফিরে বাংলা বাজার চলে আসেন। এ ঘটনার খবর এলাকায় জানাজানি হলে এলাকার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে আসলে মহাসড়কের বাইপাস ডেবনা-গোপলার বাজার সড়কের নিকটবর্তী পরিত্যাক্ত একটি বাড়ির নিকট থেকে গ্রাম পুলিশ ছবি মিয়া ভ্রামন বাড়িয়া জেলার নাসির নগর থানার পূর্ববাগ গ্রামের ছোয়াব মিয়ার পুত্র হাবিবুর রহমানকে (২৪) আটক করে।
পরে খবর পেয়ে চেয়ারম্যান খালেদের নেতৃত্বে স্থানীয় জনতা ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাকাতের পরিচয় সনাক্ত করেন। চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকরা কৌশলে আটক ডাকাতকে দিয়ে তার সহযোগিদের অবস্থান সনাক্ত করেন। একপর্যায়ে মহাসড়কের আউশকান্দি থেকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড় বহুলা গ্রামের মৃত আলা উদ্দিনের পুত্র শাকিল (২৫) এবং মজলিশপুর গ্রামের মৃত দরবেশ আলীর পুত্র ছোহেলকে (২৫) আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়। পুলিশ আটক ডাকাতদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে নবীগঞ্জ পৌর এলাকার সালামতপুর গ্রামের এম এ খালিক মিয়ার পুত্র আবদুল অজুদকে পালানোর চেষ্টাকালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করে। এসময় তার দুই সহযোগী হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘুরিয়া গ্রামের পলাশ মিয়া এবং বানিয়াচুং উপজেলার ইকরাম গ্রামের জজ মিয়া পালিয়ে যায়। থানায় আটক ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের কনকারী পাড়া গ্রামের সুজন মিয়ার পুত্র রুপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আটকৃতরা ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি দেয়ার খবর নিশ্চিত করেছে পুলিশ। সার্বিক বিষয়ে থানার ওসি মোঃ লিয়াকত আলী বলেন, সিরিজ ডাকাতির চেষ্টায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পালাতে গিয়ে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদ বলেন, কেরোসিন বোমার গুজব অনুসন্ধান করতে গিয়ে ডাকাত চক্রের কবলে আক্রান্ত হই। রহস্য উদঘাটনে স্বস্থি প্রকাশ করেন তিনি।