নিখোঁজের ৩৫ মাস : ইলিয়াস আলীকে রাতে দেখছেন বিশ্বনাথবাসী!

elias ali lostসুরমা টাইমস ডেস্কঃ নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী কে তাঁর জন্ম স্থান বিশ্বনাথে দলীয় নেতাকর্মীসহ তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নে দেখছেন উপজেলাবাসি। প্রতিদিন রাতে কিংবা দিনে ঘুমন্ত অবস্থায় ইলিয়াস আলী কে স্বপ্নে দেখছেন অনেকেই। উপজেলা জুড়ো গত কয়েক দিন ধরে ইলিয়াস আলী কে স্বপ্নে দেখা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে তাকে স্ব-শরীরের কখন দেখা যাবে কেউ বলতে পারছেনা। এলাকার দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ অনেকেই ধারণ করছেন এখনও তিনি জীবিত রয়েছে। তাঁর সন্ধানের দাবিতে এখনও অনেকেই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে আসছেন। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকা বনানী থেকে নিখোঁজ হন বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী।
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ৩৫ মাস পূর্ণ হচ্ছে আগামিকাল মঙ্গলবার। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও তাঁর ফেরার প্রতিক্ষায় প্রহর গুনছেন বিশ্বনাথবাসি। দলমত নির্বিশেষে সব বয়সের নারী-পুরুষ আশায় বুক বেঁধে বসে আছেন তাদের চিরচেনা সেই প্রিয় মানুষটি আবার তাদের মাঝে ফিরে আসবেন। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ অনেকেই। বাস্তব যতই নির্মম হউক তবুও যে সত্য তিনি নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভাকাংখিসহ সাধারন মানুষ মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। অনেকেই মসজিদ মন্দিরে করে যাচ্ছেন বিশেষ প্রার্থনা।
এলাকাবাসি জানান, এমন একজন জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ গুম হলেন অথচ দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও তাঁর কোন সন্ধান বের করতে পারছেনা সরকার। এই যদি হয় স্বাধীন দেশের অবস্থা তাহলে সাধারন নাগরিকের নিরাপত্তা কোথায় দাড়াবে? ইলিয়াস আলীকে নিয়ে এখনও মানুষের মুখে মুখে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। ইলিয়াস আলী আবার জীবিত অবস্থায় ফিরে আসবেন এমনটাই প্রত্যাশা তাঁর জন্মস্থান বিশ্বনাথবাসির। ইলিয়াস নিখোঁজের পর বিশ্বনাথে পরিদর্শন করে গেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শীর্ষস্থায়ী নেতৃবৃন্দ।
কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে দলীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষের একটাই দাবি ছিল ইলিয়াস আলী কে চাই। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে রাস্তায় নেমে আসেন এই উপজেলার নেতাকর্মীসহ সব শ্রেনী পেশার সাধারন মানুষ। জীবন বাজি রেখে বিক্ষোভ-মিছিল, সভা-সমাবেশ, অবরোধ, হরতাল কর্মসূচী পালন করে তারা। ২০১২ সালের ২২ ও ২৩ এপ্রিল দুই দিনের হরতাল আহবান করে কেন্দ্রিয় বিএনপি। হরতালের প্রথম দিন চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও বিক্ষিপ্ত সংর্ঘষ। ২৩ এপ্রিল বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল সহকারে উপজেলা সদরে আসতে থাকে নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ। এসময় পুলিশ ও আওয়ামীলীগ বাঁধা দিলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ বাঁধে। এতে তিনজন নিহত ও পুলিশসহ শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক আহত হন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান বলেন, ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর বেশ কয়েক বার স্বপ্নে দেখি তিনি গাড়ি বহর নিয়ে বিশ্বনাথে সভা করতে আসছেন।
শিক্ষক ফখরুল ইসলাম বলেন, ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে কয়েক বার স্বপ্নে দেখেছি। তিনি ফিরে আসবেন, সেই আশায় বুক বেধে রয়েছি।
ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া বলেন, মাঝে মাঝে রাতে স্বপ্নের মধ্যে ইলিয়াস আলী দেখতে পাই। আমার ধারনা তিনি জীবত রয়েছেন। বাস চালক কুদ্দুছ মিয়া বলেন, গাড়িতে যাত্রীরা বসে ইলিয়াস আলী কে স্বপ্নে দেখছেন বলে শুনেছি। সংগঠক আবদুস সালাম মুন্না বলেন, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ ইলিয়াস কে আমাদের ফুটবল খেলায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে দেখি। পর সকালে ঘুম থেকে উঠে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানাই।
দিনমজুর মনির মিয়া বলেন, ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর দুইদিন স্বপ্নে দেখি তিনি গাড়িতে বসে বিশ্বনাথে আসছেন। তাঁর কথা যখন মনে হয়,তখন চোঁখের পানি ধরে রাখা যায় না। ফল বিক্রেতা কামাল আহমদ বলেন, বাজারে লোকজনের মুখে শুনি ইলিয়াস আলী স্বপ্নে অনেকেই দেখছেন। তিনি কি আমাদের মাঝে আর ফিরে আসবেন?