শিশু জয়ীকে ৩০ দিনের মধ্যে উদ্ধার করে হাজির করার নির্দেশ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট নগরীর শেখঘাট ভাঙ্গাটিকরপাড়া নবীন ৩৪/৩ নং বাসা থেকে অপহৃত চার বছরের কন্যাশিশু স্নিগ্ধা দেব জয়ীকে ৩০ দিনের মধ্যে উদ্ধার করে আদালতে হাজির করতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ এক রিট আবেদনের (হেবিয়াস করপাস) শুনানিতে রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ১২ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে।
রুলে ২০১৩ সালের ২১ জুলাই থেকে নিখোঁজ ওই শিশুটি উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, সিলেটের জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদেশের বিষয়টি জানিয়ে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী সুরমা টাইমসকে বলেন, ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও শিশুটি উদ্ধার না হওয়ায় রিটটি করা হয়। গ্রেপ্তার মো. রবিউল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত ৩০ দিনের মধ্যে শিশুটি উদ্ধার করে আদালতে হাজির করতে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, সিলেটের জেলা প্রশাসক, সিলেটের পুলিশ কমিশনার ও সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনজীবীরা জানান, সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার রাজচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সন্তোষ কুমার দেবের শিশুকন্যা স্নিগ্ধা দেব জয়ী (৪) ২০১৩ সালের ২১ জুলাই নিখোঁজ হয়। ওই দিন শিশুটির বাবা সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির বাবা। গত ৮ মার্চ মানবাধিকার তথ্য ও পর্যবেক্ষণ সোসাইটির সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় শিশুটি উদ্ধার ও আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে মা শর্বাণী দেব রিটটি করেন।
গতকাল রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সোনিয়া পারভীন, রাসেল আহমেদ, আফতাব উদ্দিন সিদ্দিকী ও বীথি শর্মা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম।
মানবাধিকার তথ্য ও পর্যবেক্ষণ সোসাইটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সচিব ও সিলেট বিভাগীয় সভাপতি হাবিবুর রহমান তাফাদার বলেন, নিখোজ শিশুটি উদ্ধারে প্রথম দিকে প্রশাসনের গাফিলতি থাকা স্বত্তেও শেষ পর্যায়ে পুলিশ শিশুটি উদ্ধারের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল। আসামিরা ১৬৪ দঃবিঃ তে স্বীকারোক্তি দেয়া স্বত্তেও আইন শালিশকেন্দ্রের একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে শিশুটি উদ্ধার প্রক্রিয়া পুরোদমে ব্যাহত হয়ে গেছে। আমরা আশা করি মাননীয় আদালতের এই আদেশ শিশুটির উদ্ধার ত্বরান্নিত করবে। অপহৃত শিশুটিকে হতভাগা মা-বাবার কোলে অতি স্বত্তর ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবে পুলিশ।