আইএস জিম্মি আনোয়ারের বাবা-মা শোকে বাকরুদ্ধ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের সিরতে শহরের আলগানি তেলখনি থেকে ৬ মার্চ শুক্রবার শুধু জামালপুরের হেলাল উদ্দিনই নয়, নোয়াখালীর আনোয়ার হোসেনও (৩৮) অপহৃত হয়েছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এখবর নিশ্চিত করেছে। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে একই ঘটনায় অপহৃত হন আনোয়ার হোসেন। কিন্তু নামের মিল থাকায় প্রথমে তাকে সুদানি নাগরিক বলে ভুল করেছিলো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে তাকে বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত করা হয়।
আনোয়ার হোসেনের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের গয়েছপুর গ্রামে। তিনি গয়েছপুর গ্রামের মো. ইউনুছ মিয়া ও আফরোজা বেগমের ছেলে। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে আনোয়ার হোসেন দ্বিতীয়। আনোয়ার হোসেন বিবাহিত। গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী মারুফা খাতুন এবং রাহীন (৭) ও রাইশা (৫) নামের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে।
আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী মারুফা খাতুন প্রিয়.কমকে জানান, ২০১০ সালে আনোয়ার হোসেন চাকুরি নিয়ে প্রথম লিবিয়ায় যান। এরপর ২০১১ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে দেশে আসেন। ৩৬ দিন দেশে থাকার পর ২০১২ সালে ১১ ফেব্রুয়ারি ফের লিবিয়ায় যান। আর গত ৫ মার্চ রাতে তিনি সর্বশেষ তাঁর স্বামীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
মঙ্গলবার টেলিভিশনের সংবাদ থেকে মারুফা জানতে পারেন তার স্বামী ইসলামী সুন্নিপন্থি সশস্ত্র সংগঠন আই এস কর্তৃক অপহৃত হয়েছেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে টেলিফোনে স্বামীর সাথে যোগাযোগের চেস্টা করে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে স্বামীর বন্ধু লিবিয়ায় অবস্থানরত কুষ্টিয়ার মইনুল হোসেনের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয়, আনোয়ার হোসেন লিবিয়ায় যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন তারা আইএস-এর সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারে আনোয়ার ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন। এ তথ্য মইনুল হোসেন আল গানি কোম্পানির মাধ্যমে জানতে পেরেছেন।
মারুফা খাতুন জানান, এ ঘটনা শোনার পর থেকে আনোয়ার হোসেনের বাবা ইউনুছ মিয়া ও মা আফরোজা বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা কোন কথা বলছেন না। সাংবাদিকসহ মানুষের ভীড় দেখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। আর দু’চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন,‘ আমি জানি না আমার স্বামীকে আর ফিরে পাব কীনা। তিনি আর ফিরে আসতে পারবেন কীনা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন তিনি যেন আমার স্বামীকে জঙ্গিদের হাত থেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেন। আমার নাবালক সন্তানরা যেন এতিম না হয়।’