পদ পদবী রক্ষা করতে অপপ্রচারের আশ্রয় নিচ্ছে সিলেট ছাত্রদল
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ আন্দোলনের মুরোদ নেই, দলীয় পদ পদবী রক্ষার্থে ইন্টারনেটে অপপ্রচারে লিপ্ত সিলেট ছাত্রদল। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে সিলেট নগরীতে ট্রাফিক জ্যাম। এমনকি জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চলমান আন্দোলনে রাজপথে নেই। তারা গ্রেপ্তার হয়রানী এড়াতে আত্মগোপনে আছেন । আইনশৃংখলাবাহিনীর কঠোর অবস্থানের পরও ঝুকি নিয়ে রাজপথে নেমে মিছিল সমাবেশ করছে সিলেট ছাত্রদলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কিন্তু নতুন কমিটির নেতারা মাঠে না থাকলেও সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হতে ব্যতিব্যস্ত। এই অবস্থায় ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতারা তৃণমূল নেতাকর্মীদের আন্দোলনকে স্নান করে নিজেদের ব্যার্থতা কে আড়াল করতে অপপ্রচারের আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ছাত্রদল সূত্র জানায়, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নতুন নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৬ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ও দফায় দফায় হরতালের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। কর্মসূচির ৫৪ দিনের মধ্যে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এডভোকেট সাঈদ আহমদ ৫ দিন, সাধারণ সম্পাদক রাহাত চৌধুরী মুন্না ৭ দিন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ ৩ দিন, সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লোকমান ৪ দিন মাঠে ছিলেন। অথচ তারা সার্বক্ষনিক বিভিন্ন ভাবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন বলে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
আন্দোলনের শুরুতে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ রাজপথে মিছিল করতে না পেরে তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে পুরুনো মিছিলের একটি অনলাইন পোর্টালের সংবাদের লিংক শেয়ার করতে দেখা যায়।এবং তিনি ছাড়াও আবার অনেকে পুরোনো মিছিলে ছবি আপলোড করেন তাদের ফেইসবুক আইডিতে। এরপর নিজেদেরকে আন্দোলনে সক্রিয় দেখানোর জন্য বাসা বাড়ীতে পুলিশের তল্লাশি হচ্ছে বলে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেব বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মাঠে না থেকে এসব বিবৃতিও দিচ্ছেন। আবার অনেকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের বিবৃতি পাঠাচ্ছেন অনলাইন পোর্টালে। আর টাকার বিনিময়ে কয়েকটি ভুইফোড় অনলাইন পোর্টালগুলোতে এসব অপপ্রচার হচ্ছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ নতুন কমিটির নেতারা অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রচার করে ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে ক্রসফায়ারের অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়েছেন। আর এসব তারা করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের বসবাসকারী প্রবাসীদের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য। তাদের এসব কর্মকান্ড নিয়ে সিলেট ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চরম ক্ষোব্দ। তারা বলছেন ‘সিলেট যখন শান্তীপূর্ণ ভাবে আন্দোলন চলছে। তখন সিলেট ছাত্রদলের নতুন কমিটির পদবীধারী নেতারা মাঠে না থেকে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এ ধরনের ভুয়া সংবাদ প্রচার করছেন।’ আর এসব ভুয়া সংবাদ প্রচার করে তারা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বাংলাদেশের নাগরীক যারা বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন। যার ফলে তারা নিজেদের পদ ঠিকে রাখছেন আবার প্রবাসী সাবেক ছাত্র নেতাদের কাছ থেকে আন্দোলনের নামে টাকা আনার সুবিধা করছেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে ছাত্রদলের পদধারী কোন নেতার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। গনমাধ্যমের কাছে দেয়া তাদের সবকটি মোবাইল ফোনই বন্ধ পাওয়া গেছে।
সিলেট মদন মোহন কলেজ ছাত্রদলের আন্দোলনকারী এক ছাত্রনেতা ক্ষোভের সাথে বলেন, দলের এই সংকটকালে যাদের দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল তারা পুরোপুরি ব্যর্থ। তবে সিলেট ছাত্রদলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বিদ্রোহী শীর্ষ ২ নেতা আহমদ চৌধুরী ফয়েজ ,মাহফুজুল করিম জেহিন সহ অনেকে কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু নতুন কমিটির নেতারা কেউ এখনো গ্রেফ্তার হননি। এতে প্রমানীত হয় এই আন্দোলনে তাদের কারও কোন সম্পৃক্ততা নেই।
ক্রসফায়ারের তালিকা প্রসংগে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান বলেন এটি নিছক একটি গুজব। সিলেট পুলিশের কাছে ক্রসফায়ারের কোন তালিকা নেই এবং তালিকা করে ক্রসফায়ার কোন বিধানও নেই।