বোমা হামলার দৃশ্য ধরা পড়ল ক্যামেরায় (ভিডিও)
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ-হরতালের মধ্যে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনে বাসে বোমা হামলার একটি দৃশ্য ধরা পড়েছে পুলিশের স্থাপিত ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায়। ওই দৃশ্যে যে দুই যুবককে যাকে মোটর সাইকেলে এসে আশীর্বাদ পরিবহনের একটি বাসে বোমা ছুড়তে দেখা যাচ্ছে, তাদের একজন মিরপুরের টেকনিক্যাল মোড়ে রোববার রাতে পুলিশ-সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন বলে পুলিশের দাবি।
মিরপুর থানার ওসি সালাহ উদ্দিন খানের বক্তব্য অনুযায়ী, বোমা হামলাকারী ওই যুবকই ১০ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ওয়াদুদ ব্যাপারী।
সনি প্রেক্ষাগৃহের কাছে ধারণ করা ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, মিরপুর ২ নম্বরমুখী বাসটিতে বিপরীত দিক থেকে আসা মোটর সাইকেল আরোহী দুই যুবকের একজন হাতবোমা ছুড়ে মারে। এটি বাসের গায়ে লেগে বিস্ফোরিত হয়।
রোড ডিভাইডারের অন্য পাশে থাকা মোটর সাইকেল আরোহীরা ডিভাইডারের খুব কাছে এসে অন্য পাশে থাকা বাসটি লক্ষ্য করে বোমাটি ছুড়ে মারে। তারপরই তারা দ্রুত চলে যায়। এই ঘটনাটি গত ২৫ জানুয়ারি বিকালের বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মোটর সাইকেলে লাল জ্যাকেট পরা যে যুবককে দেখা গেছে, সেই বিএনপি সমর্থক ওয়াদুদ বলে পুলিশের দাবি। তবে ভিডিওতে হেলমেট ঢাকা থাকায় তার চেহারা দেখা যাচ্ছিল না। আর লাল হেলমেটধারীর পেছনের সিটে যাকে দেখা গেছে, তার নাম রুবেল বলে দাবি ওসি সালাহ উদ্দিনের। গত ৫ জানুয়ারি বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ শুরুর পর বোমাবাজি ঘটতে থাকলে মোটর সাইকেলে একের অধিক ব্যক্তি বহন নিষিদ্ধ করে পুলিশ।
ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপের তিন দিন পরের ৫১ মিনিটের এই ভিডিও চিত্রে বোমা হামলাকারী ছাড়াও আরও অন্তত তিনটি মোটর সাইকেল দেখা গেছে, যাতে চালকের সঙ্গে অন্য আরোহী ছিল। ওসি সালাহ উদ্দিন বলেন, ওয়াদুদ মোটর সাইকেলে চড়ে ২৫, ২৯ জানুয়ারি ও ২২ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে বাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলাগুলোর ভিডিও চিত্রও পুলিশের কাছে রয়েছে।
তিনি বলেন, রোববার বোমা মারার সময় ওয়াদুদকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দেয় জনতা। পরে নাশকতাকারীদের ধরতে পুলিশ তাকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। “রাত সোয়া ১টার দিকে মিরপুর টেকনিক্যাল ফুটওভারের কাছে যাওয়া মাত্র পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। পরে আত্মরক্ষায় পুলিশও গুলি ছোড়ে। গোলাগুলির এক পর্যায়ে ওয়াদুদ গুলিবিদ্ধ হয়।”
চলমান নাশকতার মধ্যে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছে। তবে বিএনপির দাবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে সরকারবিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে।
ওয়াদুদের চাচা চান মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, তার ভাতিজা কোনো দলের সঙ্গে জড়িত নন, তিনি ঝুটের ব্যবসা করেন। “সে কোনো বোমা নিক্ষেপের সঙ্গে জড়িত নয়।”
এই বিষয়ে ওসি সালাহ উদ্দিন বলেন, “কেউ নিহত হলে তার স্বজনরা কখনও বলবে না যে, তাদের স্বজন খারাপ ছিল। তাছাড়া ওয়াদুদ বোমা মারার মতো অপকর্ম করত, তা তার পরিবারের অগোচরে করত হয়ত। স্বজনদের তা না জানারই কথা।”
তিনি দাবি করেন, মিরপুর থানা যুবদলের সভাপতি মামুন হাসান পারভেজ ও ছাত্রদল নেতা মিল্টনের নির্দেশে বোমা হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে ওয়াদুদ। পুলিশ ওয়াদুদের মোটর সাইকেলটি জব্দ করেছে।
ওয়াদুদের চাচা বলেন, রোববার সকালে টোলারবাগের বাসা থেকে কালো রঙের মোটর সাইকেলে করেই বেরিয়েছিলেন তার ভাতিজা। বিকালে জানতে পারেন তাকে পুলিশ ধরে নিয়েছে।