বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত মডেল ইউনিয়ন ঘোষণা
যারা অপরাধমুলক তৎপরতার সাথে জড়িত তারা মানুষের বন্ধু হতে পারে না : জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম
শাহ মো. হেলাল, বালাগঞ্জ: বালাগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্যবিবাহ মুক্ত মডেল ইউনিয়ন হিসেবে ঘোষণা প্রদান করা হয়েছে। খুব শিঘ্রই পর্যায়েক্রমে উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন সমুহকেও বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা হবে বলে সংশিষ্টরা জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ কমপেক্স প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এমএ মতিন।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এবং প্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রটেক্টিং হিউম্যান রাইটস্ পিএইচআর কর্মসূচির সহযোগীতায় আয়োজিত বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আবদাল মিয়া, বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সৈয়দ আলী আছগর, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. রেফা বেগম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদ্মমোহন সিনহা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ চন্দ্র মন্ডল, বালাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত শাহ ফরিদী, বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. তরিকুল ইসলাম তালুকদার, প্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর পিএইচআর প্রোগামের সিলেটের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান। প্যান ইন্টারন্যাশনালের প্রজেক্ট অফিসার মো. হারুন অর রশিদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পিএইচআর কর্মসূচির ডেপুটি প্রজেক্ট কো-অডিনেটর শাহিদা সুলতানা, পিএইচআর প্রজেক্ট কর্মকর্তা এডভোকেট জাকিয়া জালাল, জৈন্তিয়া ছিন্নমূল সংস্থার প্রজেক্ট অফিসার রাজু দাস, ইউপি সদস্য জয়দীপ চন্দ্র দাস, জামাল আহমদ খলকু, সাংবাদিক শাহাব উদ্দিন শাহিন, রজত দাস ভুলন, মো. জিলুর রহমান জিলু, সমাজকর্মি টিপু সুলতানসহ বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাল্যবিবাহ মুক্ত ইউনিয়ন ঘোষণাকালে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণার এ বার্তাটি অন্যান্য ইউনিয়নবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। এর মাধ্যমে সমগ্র উপজেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণার কাজ এগিয়ে নিতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদসহ সকল ইউনিয়ন পরিষদের দৃষ্টি কামনা করেন। জেলা প্রশাসক দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য নাগরিক সমাজের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, যারা অপরাধমুলক তৎপরতার সাথে জড়িত তারা মানুষের বন্ধু হতে পারে না। এদের প্রতিহত করতে সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে একযোগে প্রতিরোধ গতে তুলতে হবে। অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবদাল মিয়া পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ইউনিয়নসহ সমগ্র বালাগঞ্জ ওসমানীনগর উপজেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত করতে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বিকালে বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ (ইনফো-সরকার) প্রকল্পের আওতায় উপজেলা সরকারী অফিসে ট্যাবলেট পিসি প্রদান করেছেন। একই অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক সিলেটের কেবি এহিয়া ওয়াকফ এস্টেট কর্তৃক প্রদত্ত গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিতু মিয়া শিক্ষা বৃত্তি ২০১৫ বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুর রহমান।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকারের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তৃতা করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আবদাল মিয়া, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সৈয়দ আজগর আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেফা বেগম, বালাগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম তালুকদার, ওসমানীনগর থানার ওসি মোরছালিন আহমদ, বালাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত শাহ ফরিদী, উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা পদ্মমোহন সিংহ, এডভোকেট জাকিয়া জালাল, শাহিদা সুলতানা, রাজু দাস, শিক্ষক আলী আমজাদ ভূইয়া, শান্তিব্রত চেীধুরী,বালাগঞ্জ ডিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল হাফিজ রেনু, আইয়ুব আলী, এম এ মালেক, বোয়ালজুড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলম, বালাগঞ্জ প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি রজত দাস ভুলন,গহরপুর রাইটার্সকাবের সভাপতি জিলুর রহমান জিলু প্রমুখ। অনুষ্টানে প্রধান অতিথি ক্রেষ্ট প্রদান করেন ও ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষনা করে ফলক উম্মোচন করেন। পরে বালাগঞ্জ উপজেলা হল রুমে ইউএনও আশরাফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার নাজমুল ইসলাম সরকারের পরিচালনায় বক্ততা করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া, বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলা সৈয়দ আজগর আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেফা বেগম,ওসি তরিকুল ইসলাম তালুকদার, ওসমানীনগরের ওসি মোরছালিন আহমদসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সুধীজন। অনুষ্টান ৩১ জন কর্মকর্তাদের মধ্যে ট্যাবলয়েট পিসি, ২০জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিতু মিয়া বৃত্তি বিতরন ও ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্টানের মধ্যে ৫টি শিক্ষাচার্ড প্রধান করা হয়। আগে জেলা প্রশাসক বালাগঞ্জ উপজেলার আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরে বালাগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন।