কর্তপক্ষ নজর দিন : মৌলভীবাজারের সুরভী ড্রাগ হাউসে চলছে স্বেচ্ছাচারিতার রামরাজত্ব
মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজারের সুরভী ড্রাগ হাউসে চলছে স্বেচ্ছাচারিতার রামরাজত্ব। এ ফার্মেসী ব্যবসায়ীর কাছে নীরিহ জনসাধারণ অসহায়। কোন রোগী বা তার স্বজন বিশেষকরে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অশিক্ষিত চাষা-ভূষা লোকজন এ ফার্মেসীতে ঔষধ কিনতে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধরিয়ে দেয়া হয় প্রেসক্রিপশনে লেখা কোম্পানীর ঔষধের স্থলে অন্য কোম্পানীর ঔষধ। অনেক সময়, প্রেসক্রিপশনের অতিরিক্তও দু’একটি ভিটামিন জাতীয় ঔষধ ধরিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। প্রেসক্রিপশনে লেখা কোম্পানীর স্থলে অন্য কোম্পানীর ঔষধ ধরিয়ে দেয়ার বিষয়টি জানার পর কোন লোকজন তা ফেরৎ দিতে গেলে, ফেরৎ রাখা হলেও মূল্য ফেরৎ দেয়া হয়না। ফেরৎ রাখা ঔষধের পরিবর্তে অন্য ঔষধ নিয়ে যেতে বলা হয়। অন্য ঔষধ লাগবেনা জানিয়ে মূল্য ফেরৎ চাইলে তাতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে মূল্য ফেরতপ্রার্থীর সাথে করা হয় অসৌজন্যমূলক আচরণ। বলা হয়- আমি মূল্য ফেরৎ দিতে পারবনা। হু আর ইউ ? আমি আপনাকে চিনিনা। যান, আপনি কি করতে পারেন আমি দেখে নেব। এ অবস্থায়, সংশ্লিষ্ট রোগী বা তার স্বজন বিশেষকরে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অশিক্ষিত চাষা-ভূষা লোকজন “ভিক্ষা চাইনা কুত্তা সামলান” পরিস্থিতিতে পতিত হয়ে ঔষধের বদলে ঔষধ বা ফেরৎ দেয়া ঔষধের মূল্য ফেরৎ না নিয়েই অসহায়ের মত স্থান ত্যাগে বাধ্য হন। সম্প্রতি একজন সিজারকৃত প্রসূতির বোন উক্ত সুরভী ড্রাগ হাউসে গিয়ে প্রেসক্রিপশনে লেখা একটি ঔষধ ছাড়া অন্যান্য ঔষধ দিতে বলেন। কিন্তু, ফার্মেসী কর্তৃপক্ষ অন্যান্য ঔষধের সাথে কৌশলে, বাদকৃত ঔষধটিও প্রেসক্রিপশনে লেখা কোম্পানীর স্থলে অন্য কোম্পানীর ঔষধ ধরিয়ে দেন। ফলে, একই ঔষধ দুই কোম্পানীর দুটি ডোজ সেবন করে ওই প্রসূতি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এতে সন্দিহান হয়ে ওই প্রসূতির বোন জনৈক শিক্ষিত ব্যক্তিকে দিয়ে প্রেসক্রিপশনের সাথে ঔষধ মিলিয়ে দেখেন একই ঔষধ দুই কোম্পানীর দুটি ডোজ সেবন করা হয়েছে। এদিকে প্রসূতির অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকায় তাকে ডাক্তারের স্মরনাপন্ন করতে হয়। ঐদিনই সুরভী ড্রাগ হাউসে গিয়ে বিষয়টি জানালে কর্তৃপক্ষ বলেন- এটা কোন সমস্যা নয়, সব ঠিক হয়ে যাবে। অতিরিক্ত ঔষধগুলো ফেরৎ রেখে বলেন- অন্য ঔষধ নিয়ে যান। অন্য ঔষধ লাগবেনা জানিয়ে মূল্য ফেরৎ চাইলে কর্তৃপক্ষ তাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এসময় উপস্থিত একজন সিনিয়র সাংবাদিক এর প্রতিবাদ জানালে কর্তৃপক্ষ তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করেন এবং ঔদ্ধতভাবে বলেন- আমি মূল্য ফেরৎ দিতে পারবনা। হু আর ইউ ? আমি আপনাকে চিনিনা। যান, আপনি কি করতে পারেন আমি দেখে নেব। এভাবে কথা কাটাকাটি ও মৃদু উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট রোগীর বোন ফেরৎ দেয়া ঔষধের মূল্য ফেরৎ না নিয়েই অসহায়ের মত স্থান ত্যাগ করেন। এ ধরণের ঘটনা ছাড়াও, ঔষধের প্যাকেটে লেখা মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের অভিযোগও শোনা গেছে সুরভী ড্রাগ হাউসের বিরুদ্ধে। শুধু সুরভী ড্রাগ হাউসই নয়, শহরের আরও কয়েকটি ফার্মেসীতে চলছে এ ধরণের স্বেচ্ছাচারিতার রামরাজত্ব। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী পদক্ষেপ কামনা করেছেন নীরিহ জনসাধারণ।