জামির হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী প্রদীপ চেয়ারম্যান ৫দিনেও গ্রেফতার হয়নি: উদ্ধার হয়নি বন্দুক
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের শাল্লায় জামির হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও ঘটনার মুল হোতা বহুল আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রদীপকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধার হয়নি হত্যকান্ডে ব্যবহৃত একনলা সেই বন্দুকটিও। প্রদীপের আত্বগোপনে চলে যাওয়া ও বন্দুক উদ্যারে পুলিশের গড়িমসির ঘটনা নিয়ে নতুন করে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার চিকাডুবি নয়াহাটি গ্রামের মতিন মিয়ার ছেলে জামির হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বাড়ির পাশেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বন্দুকদিয়ে গুলি করে শনিবার নির্মমভাবে হত্যা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সুত্রে জানা যায়, উপজেলার নয়াহাটির মতিনের ছেলে জামিরকে শনিবার রাত ১০ টার দিকে প্রদীপ চেয়ারম্যানের নির্দেশে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বাড়ির পাশে বন্দুক দিয়ে গুলিকরে হত্যা করে। হত্যকান্ডের সময় ঘটনাস্থলেই উপজেলার আটগাও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনেদ মনির প্রদীপ সহ তার একাধিক সহযোগীরা উপস্থিত ছিল । পরদিন শর্মা গ্রামের পাশে নদীতে ভাসমান অবস্থায় পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে । ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার সন্ধ্যায় নিহতের লাশ দাফন করা হয়। পুত্রকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় হতদরিদ্র পিতা আব্দুল মতিন উপজেলার বহুল আলোচিত আটগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান প্রদীপকে প্রধান আসামী করে রবিবার রাতে ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রদীপের সহযোগী প্রেমতোষ দাস নামক এক ব্যাক্তিকে রবিবার গভীর রাতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। নিহত জামিরের পরিবারের লোকজন বলেন, প্রদীপ চেয়ারম্যান ঘটনার জায়গায় দাড়াইল আছিল, ফয়সল সহ দু’জনে দুইডা ফায়ার করছে। জামিরের স্ত্রী মিনারা বেগম জানান, চেয়ারম্যান ডাক দিছে বের হওয়ার লাগি, বের হওয়ার পর দ্ইুডা গুলির শব্দ শুনছি, আমরারে ঘরের চারদিকে চেয়ারম্যানের লোকজন দাও (দা) আর রামদা দিয়া ঘিইরা রাখছে। নিহতের বাবা মতিন মিয়া বলছেন, আমি ঘটনার দিন বাড়িতে ছিলাম না, ছেলের মা আর তার বউ বলছে, চেয়ারম্যান, ফয়সল, নুরুজ্জামান, দুলাল, মন্ত, হেলাল, প্রেমতোষ ও পলাশসহ তাদের সহযোগীরা পরিবারের লোকজনকে ঘরের মধ্যেই বন্ধি করে জামিরকে ধরে বাইরে নিয়া গিয়া গুলি করে মারছে। তিনি আরো জানান, জামির গেল বছর দাউদপুর ছিল সে চিকাডবি নয়াহাটিতে নতুন বাড়ি করছে। এখানে ২০ একর খাঁসজমি রয়েছে, চেয়ারম্যানের আরেক সহযোগী দুলালকে আমরা ২৪ পরিবার আড়াই হাজার টাকা করে দিছিলাম বন্দোবস্তোর কাজ কইরা দিতে। কিন্তু চেয়ারম্যানের কথায় সে আর কাজ করে দেয়নাই, চেয়ারম্যান এখানে ইটভাটা করতে চায়, আমার ছেলেরে চেয়ারম্যান কইছিল কাগজ ছাড়া সরকারি জায়গায় ঘর বানাইছ না আমার ছেলে তার প্রতিবাদ করলে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যাকরে।
সরজমিনে খোঁ নিয়ে জানা যায়, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। হত্যার পর চেয়ারম্যানের সহযোগী ফয়সল পাশের বাড়ি কামালের ঘর থেকে দড়ি বাঁশ নিয়ে লাশ শর্মা গ্রামের পাশে নদীতে ফেলে দেয়।
পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ বলেন, হত্যাকান্ডের সময় প্রদীপ চেয়ারম্যান মুখোশ পড়ে ঘটনাস্থলেই দাড়ানো ছিল এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে, প্রদীপ সহ অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করতে এবং হত্যকান্ডে ব্যবহৃত বন্দুকটি উদ্যারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হত্যকান্ডের সাথে যতবড় প্রভাবশালী ব্যাক্তিই জড়িত থাকুক না কেন তাদেরকে আইনরে আওতায় নিয়ে এসে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হবে।