ওসমানীনগর আ.লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ২৫ জানুয়ারী
ওসমানীনগর প্রতিনিধিঃ সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ওসমানীনগর থানা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ২৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনকে সামনে রেখে দুটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে প্রার্থীরা ভোটার ও কাউন্সিলারদের কাছে ধরনা দিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। এক পক্ষ অপরপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনাও করছেন। নতুন প্যানেলের নেতারা পুরনোদের সাংগঠনিক ব্যর্থতার দিক তুলে ধরছেন।
অন্যদিকে বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্তরাও তাদের অতীতের সফলতা তুলে ধরে নতুনদের চ্যালেঞ্জ করছেন। কাউন্সিলরদের মন জয় করতে নেতৃস্থানীয়দের প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ওসমানীনগরের আওয়ামী রাজনীতির মাঠ।
ভোটের রাজনীতিতে ওসমানীনগর বরাবরই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তৃণমূল পর্যায়ে এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের শক্ত ভিত্তি রয়েছে। সর্বশেষ ২০০৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সভাপতি পদে মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবদাল মিয়াকে দায়িত্ব দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়।
প্রায় ১০ বছর পর এই সম্মেলনকে সামনে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। তৃণমূল নেতাকর্মী, কাউন্সিলর ও ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কাউন্সিলরা ২৫ জানুয়ারি নির্বাচিত করবেন তাদের পছন্দের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। আর নেতৃত্বের এই লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন দুই প্যানেলের চার নেতা। একটি প্যানেলের হয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন বর্তমান কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দাল মিয়া । এবং অপর প্যানেলে তাজপুর ইউনিয়নের পাঁচ বারের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।
এই দুই প্যানেল সিলেট-২ আসনের সাবেক সাংসদও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্যানেল হিসেবে কাউন্সিলরদের কাছে ইতোমধ্যে পরিচিত লাভ করেছে।
সূত্র জানায়- সাবেক সাংসদ শফিক চৌধুরীর পছন্দের নেতারা দিনরাত কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। অপরদিকে নিজের পছন্দের প্যানেলকে ঠিকিয়ে রাখতে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন।
কাউন্সিলরদেরকে নিজেটের দিকে টানতে প্রতিনিয়ত তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন শীর্ষস্থানীয় এই দুই নেতা। তাদের অনুসারীরাও গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাউন্সিলরদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন নিজেদের প্যানেলকে জয়ী করতে।
তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিতে ভিন্ন পদ্ধতিতে এবার আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে ৮টি ইউনিয়নের ২১ জন এবং জেলা কমিটির কো-অপ্টকৃত ১৫ জন মিলে মোট ১৮৩ জন কাউন্সিলর তাদের পছন্দের প্রার্থীকে গোপন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, রাজনৈতিক ক্লিন ইমেজধারীদের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। তারা বলছেন, এবার আ’লীগের সৎ-যোগ্য, দক্ষ-সাহসী এবং ত্যাগী ব্যক্তিদের নেতৃত্বে দেখতে চান তারা। যারা দল এবং নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে এগিয়ে এসেছেন তাদের প্রতি তৃণমূলের সমর্থন থাকবে।
তবে এবারের সম্মেলনে পরিবর্তনের সুর লক্ষ্য করা গেছে এবং নতুন প্যানেলের পাল্লাই ভারি হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। আবার বর্তমান দায়িত্বশীলদের পুনঃনির্বাচিত হওয়ারও সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে।
সভাপতি প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন- দলকে সংগঠিত এবং দলের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে কাউন্সিলরদের কাছে যাচ্ছি। এই এলাকার আওয়ামী রাজনীতির সুনাম ফিরিয়ে আনাই আমার মূল লক্ষ।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আবদাল মিয়া বলেন- দীর্ঘদিন দল এবং নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম, আগামীতেও থাকতে চাই। দলকে সংগঠিত রাখতে যোগ্যদের মনোনীত করতে কাউন্সিলরা ভুল করবেন না।