মৌলভীবাজারে অশ্রীলতার মোহে হারিয়ে যাচ্ছে তরুন প্রজন্ম !
মেলা-যাত্রাপালা-গানের আসরের লটারি ও জুয়ার ফাঁদে মানুষ, বৃদ্ধি পাচ্ছে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি
মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে মেলা, যাত্রাপালা এবং অনুমোদনহীন গানের আসরের পাঁতানো লটারি ও জুয়ার ফাঁদে প্রতিদিন কোটি টাকার বানিজ্য জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রভাবশালী মহল চিহিৃত করে দৈনিক ভিত্তিতে সেলামী প্রদানের ফলে জুয়ার আসর এবং লটারী বানিজ্য একপ্রকার জায়েজ হয়ে উঠেছে জেলার সর্বত্র। উঠতি প্রজন্ম লটারী বানিজ্য এবং জুয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়ায় শহর এবং গ্রামাঞ্চলে বৃদ্ধি পাচ্ছে চাঁদাবাজিসহ ছিচকে ছিনতাইয়ের মাত্রা। অশ্রীলতার মোহে হারিয়ে যাচ্ছে মৌলভীবাজারের তরুন প্রজন্ম। জানা গেছে- রাজনৈতিক মহলের চাঁপে সংশ্লিষ্ট জেলা ও পুলিশ প্রশাসন জেলার বিভিন্ন স্থানে আনন্দমেলা ও যাত্রাপালার জন্য মেয়াদ ভিত্তিক অনুমোদন প্রদান করছে। তন্মাধ্য যাত্রাগানের আসরে শুধু অশ্লীলই নয়, প্রায় উলঙ্গ নৃত্য, অসামাজিক কার্য্যকলাপসহ প্রকাশ্যে জুয়ার আসর বসায় সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া। ক্ষিপ্ত জনসাধারন ইতিমধ্যে রাজনগর ও কমলগঞ্জের ৩টি যাত্রাপ্যান্ডেল ভেঙ্গে দিয়েছে। চলমান যাত্রাপ্যান্ডেলের মধ্যে রাজনগর উপজেলার করিমপুর চা-বাগান ও শ্রীমঙ্গলের লছনা এলাকায় যাত্রাপ্যান্ডেলে প্রতি রাতে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর বসে। মৌলভীবাজারসহ আশপাশ জেলার পেশাদার জুয়ারীর সাথে উঠতি জুয়ারীরাও শরিক হয়ে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলায় মেতে উঠছে। এদিকে, মৌলভীবাজার সদরের শেরপুর, মনুমুখ ও আথানগিরি এলাকায় গানের আসরের নামে প্রতি রাতে জুয়ার আসর বসে। জুয়ার আসরের নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়া থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ মুখ বুঝে এ উপদ্রব হজম করছেন। পুলিশের অবগতিতে আনলেও রহস্যজনক কারনে পুলিশ নিরবতা পালন করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয মাঠে বিজয় মেলা এবং শ্রীমঙ্গল ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনন্দ মেলার নামে চলছে লটারী বানিজ্য। প্রতি রাতে দুটি মেলায় ৫/৬টি মোটর সাইকেলসহ অন্যান্য সামগ্রীর লটারী ড্র অনুষ্টিত হচ্ছে। লটারির কূপন বিক্রি হচ্ছে গ্রাম-গ্রামান্তরে। ২০/৩০ টাকায় লক্ষাধিক টাকার মোটর সাইকেল প্রাপ্তির টোপ ফেলে প্রতিদিন ৫০/৬০ হাজার কূপন বিক্রি করা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা সৃষ্টির মাধ্যমে লটারি বাণিজ্য প্রসারে অবৈধভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্যাবল নেটওয়ার্ক। ফলে মানুষ ঘরে বসেই লটারির ড্র দেখতে পারায় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের নানা বয়সী লোকজন এমনকি উঠতি যুবতি ও মহিলারাও দেদারছে ক্রয় করছেন লটারির কূপন। সংশ্লিষ্ট মহল বলছেন ঘুরে ফিরে এটাও এক প্রকার জুয়া। আর, এসবই প্রকাশ্যে চলছে অনুমোদন ছাড়াই। উল্লেখ্য- মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের চলমান বিজয় মেলা নিয়ে ব্যাবসায়ী সমাজ ইতিমধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করার পাশাপাশি কিছুদিন পূর্বে মৌলভীবাজার শহরের চৌমোহনায় বিশাল লোকসমাগমনের মাধ্যমে মানববদ্ধন কর্মসুচীও পালন করেছেন। কিন্তু, অবস্থার হয়নি কোনই পরিবর্তন।