‘মালাউন’ গালি দেয়ায় সরকারি কর্মকর্তার চাকরিচ্যুতির দাবি
সনাতন ধর্মালম্বলীদের ‘মালাউন’ গালি দেওয়ায় প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতার বহিস্কার ও এক সরকারি কর্মকর্তার চাকরিচ্যুতির দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। জোটের নেতারা বলেছেন, তাদের এমন গালি সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিকে বিনষ্ট করার অপপ্রয়াস। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সনাতন ধর্মালম্বীরা বসে থাকবেনা। শনিবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন মহাজোটের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকেশ রায়।
বক্তব্যে বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উদযাপন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ যুক্তরাজ্যের সাধারণ সম্পাদক ও লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সুশান্ত দাশ গুপ্তকে ‘মালাউন’ গালি দেন আওয়ামী লীগ কর্মী জনৈক শাহনেওয়াজ। তার সাথে সুর মিলিয়ে সুশান্তকে একই গালি দেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। গত সপ্তাহে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলামও সিলেটবাসীকে কটাক্ষ এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বি শিক্ষকদের মালাউন গালি দেন। একজন প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা ও একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সা¤প্রদায়িক গালির ফলে বাংলাদেশের আপাময় হিন্দু স¤প্রদায়ের মানুষকে ব্যথিত করেছে, ক্ষুব্দ করেছে। তার এই গালি চরম দৃষ্টতার শামিল।
বক্তব্যে বলা হয়, ‘মালাউন’ গালি পাকিস্তানীদের ভাষা, বাঙ্গালীদের মুখে এরকম শব্দ মানায় না। কারণ স্বাধীনতার পূর্বে পাকিস্তানীরা হিন্দুদের মালাউন বলে গালি দিত। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মুখে এরকম সাম্প্রদায়িক উক্তি কোনভাবেই কাম্য নয়। কারণ আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক আদর্শে, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে লালিত করে সারাবিশ্বে প্রশংসা কুড়াচ্ছে, ঠিক এমন সময় আনোরুজ্জামানের এমন মন্তব্য সুগভীর কোনো চক্রান্ত কি না, তা নিয়ে ভাবার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মহাজোট নেতারা জানান, আনোরুজ্জামানের আপন মামা মৃত গৌছ রাজাকার মুক্তিযুদ্ধকালে সিলেটের বালাগঞ্জ ওসমানীনগরের বুরুঙ্গা গণহত্যার, গণধর্ষণসহ হিন্দু বাড়ী ঘর লুটপাটের সাথে জড়িত ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আনোয়ারুজ্জামানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বালাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতির দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জোটের নেতা অ্যাডভোকেট তমাল চন্দ্র নাথ, প্রভাষক চিত্তরঞ্জন রাজবংশী, মুক্তিযোদ্ধা হরকুমার চন্দ্র, দেবাশিষ কুমার সিংহ, অনিক কর দ্বীপ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি