সুনামগঞ্জের দু’টি ট্রলার বোঝাই চোরাই কয়লা সহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল আটক : গ্রেফতার ৪
আ’লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খাঁ’র ভাতিজা ও অপর এক ইউপি সদস্য সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সুনামগঞ্জ ও প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের পাটলাই নদী দিয়ে দু’টি ট্রলার বোঝাই করে সীমান্তের ওপার থেকে বিনা শুল্কে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা ৪৫ মেট্রিক টন কয়লা সহ পুলিশ ৪ চোরাচালানীকে বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করা করেছে। জব্দকৃত চোরাই কয়লা ও ট্রলারের মুল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খাঁ’র ভাতিজা অপর এক ইউপি সদস্য সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত মে মাস থেকে জেলার শুল্ক ষ্টেশন গুলো দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকার সুবাধে সুনামগঞ্জ- ৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়নের তাহিরপুরের টেকেরঘাট, বালিয়াঘাট ও চারাগাঁও সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে একাধিক সংঘবদ্ধ চোরাচালানী চক্র প্রায়ই বিনা শুল্কে চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে শত শত মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে আসার পর নৌ-পথে কিশোরগঞ্জের ভৈরব, নেত্রকোণার কলমাকান্দা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুয়া মিনিপাস ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের ভুয়া চালান পত্র দিয়ে চোরাই কয়লা সরবরাহ করে আসছে। গোপন সংবাদের ভিক্তিত্বে খবর পেয়ে থানার এসআই মোবারক হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গতকাল সকালে সুলেমানপুরের সন্নিকটে পাটলাই নদী থেকে দু’টি ট্রলার বোঝাই ভারতীয় চোরাই কয়লা সহ ৪ চোরাচালানীকে হাতে নাতে গ্রেফতার করেন। এ কয়লা চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খা’র ভাতিজা দুধের আউটা গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে হুমায়ুন,একই গ্রামের মৃত সফর আলীর ছেলে ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য লুৎফুর মিয়া, ছিদ্দিক মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক, মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে জামাল, মৃত হারিছ উদ্দিনের ছেলে সোহেল, মদনপুর গ্রামের মৃত লক্ষিকান্তর ছেলে উমাকান্ত সরকার,চারাগাঁও’র মগবুল হোসেনের ছেলে শফিকুল ইসলাম, বাঁশতলা গ্রামের নছর আলীর ছেলে আব্দুল গফুর ও একই গ্রামের মৃত রঙ্গু মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেনকে আসামী করে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। এদিকে চোরাই কয়লার ট্রলার ছাড়িয়ে নিতে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খাঁ কয়েক দফা থানায় তদবীর করেও ব্যার্থ হয়েছেন বলে থানা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সুত্র জানিয়েছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহীদুল্লাহ জানান, পুলিশ নিশ্চিত হয়েই ভারতীয় চোরাই কয়লা সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে এছাড়াও গ্রেফতারকৃতরা পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে অন্যান্য চোরাচালানীদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান, মহাজোঠ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ছয় বছর ধরে আ’লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খাঁ’র লোকজন রফিক ও দুলদুল গংদের বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশন ও তার ঘনিষ্ট সহচর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক জয়ধর আলী তার ছেলে নজরুল ও ভাতিজি জামাই জিলানি, রমজান, চাঁনমিয়া গংদের দিয়ে চারাগাঁও শুল্ক ষ্টেশনের দু’শুল্ক ষ্টেশন এলাকাকে দু’ভাগে ভাগ করে “বাংলা কয়লা” “চুরির কয়লা” ও “চোরাচালানের কয়লা” থেকে প্রথমে সীমান্তে বস্তাপ্রতি পরে নৌ-পথে টন প্রতি ১’শ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্য্যন্ত পুলিশ-বিজিবি-কাস্টমসকে ম্যানেজ করার কথা বলে চাঁদা আদায় করিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। জয়ধর আলীর সাথে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এসবের কিছুই জানিনা,আমি কোন টেকা পইসা লইনা, যা জানতে চাইন আমার নেতা আবুল চেয়ারম্যানের কাছে জাইন্যা নিন। আবুল হোসেন খা’র বক্তব্য জানতে উনার ব্যাক্তিগত মুঠোফোনে (০১৭৪৩৯০০৭৫৮) বার বার যোগাযোগ করার পর তিনি নিজেকে আবুল হোসেন খাঁ নয় আবুল হোসেন ভুঁইয়া নামে পরিচয় দিয়ে নিজেকে আড়াল করার অপচেষ্টা করে মুঠোফোনের লাইনটি কেটে দেন।