বিশ্বনাথে দখলবাজদের কবলে বিলিন হচ্ছে ‘চরচন্ডি’ নদী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ কোন এক সময়ে স্থল পথ ছিলনা। ওই নদী দিয়ে নৌকায় করে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতেন জনসাধারণ। শুধু তাই নয়। কোন এক সময়ে ওই নদীর বুকে চলাচল করত বড় বড় মালবাহী নৌকাও। পশ্চিমাঞ্চলের জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র জ্বল পথই ছিল ওই নদী। সেই সময়ে নদীর ছিল ভরা যৌবন। বর্ষায় ভরা পানিতে থৈ থৈ করত। বর্তমানে নদীটির নাম ‘চরচন্ডি’ খাল বলে পরিচিত। আজ ওই খড়শ্রোতা ‘চরচন্ডি’ নদীটি দখলবাজদের কবলে পড়ে বিলিন হতে চলেছে। প্রতি বছরে পুরাতন হাবড়াবাজারে নদীর চর দখল করে দখলবাজরা গড়ে তুলছেন তাদের ইচ্ছেমত স্থায়ীভাবে পাঁকা-আধাপাঁকা দালান ও বাঁশের তৈরী দোকান কোঠা। শুকনো মৌসুম আসলেই চর থেকে প্রায় ১২ হইতে ১৫ ফুর্ট ভেতরে প্রবেশ করে নদীর গভীর থেকে পাঁকা করে সড়কের মাপে ভিটা ডালাই করে গড়ে তুলছেন দোকান কোঠা। মাত্র কয়েক বছরের ভেতরে এভাবে বাজারের পুর্ব থেকে পশ্চিম বাজার পর্যন্ত গড়ে ওঠেছে অবৈধভাবে প্রায় শতাধিক দোকান। গত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ওই নদীর চরে গড়ের ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ৪/৫বছর ধরে আবারও চলছে দখলের হিড়িক। ওই দখলের খবর পেয়ে প্রশাসনের সংশ্লীষ্ট কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে দোকান তৈরীর কাজ বন্ধ করতে দখলবাজদের লোক দেখানো নিষেধ করে অফিসে চলে যান। পরে ওই দখলবাজরা তাদের অফিসে গিয়ে সংশ্লীষ্ট কর্মকর্তার সাথে দেখা করে পুনরায় কাজ শুরু করেন। কিন্তু দখলবাজরা পুনরায় কাজ শুরু করার পর আর ভুমি অফিসের কর্মকর্তারা কোন প্রকার ভুমিকা রাখেন না। রহস্যজনক ভাবে তারা নিরব হয়ে বসে থাকেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় হাবড়া রমজানপুর গ্রামের মৃত সইরত আলী’র পুত্র সুন্দর আলী ও তার ভাই সাইদ আলী ওই নদীর চর দখল করে সম্পুর্ণ অবৈধভাবে দালানের দোকান কোঠা তৈরী করছেন। এর পুর্বে সেখানে তাদের দখল করা একটি বাঁশের তৈরী দোকান কোঠাও ছিল। তারা পুর্বের ওই বাঁশের ঘর ভেঙ্গে বর্তমানে ৬/৭দিন ধরে দালান তৈরী করতে শুরু করছেন। খবর পেয়ে বুধবার বিশ্বনাথের তফসিলদার অনিল কুমার সিংহ সেখানে গিয়ে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে যান। পরে বৃহস্পতিবার সুন্দর আলী তফসিলদারের সাথে দেখা করে পুনরায় আবার দালানের কাজ শুরু করেছেন বলে শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে যায়। তফসিলদারের সাথে দেখা করার কথা ও অবৈধভাবে দোকান নির্মান করার বিষয়টি দখবাজ সুন্দর আলী সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার দখলবাজ সুন্দর আলী তার সাথে দেখা করার কথা স্বীকার করে তফসিলদার অনিল কুমার সিংহ বলেন, সেখানে গিয়ে সুন্দর আলী’কে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে আসেন। এবং এঘটনায় ভুমি কর্মকর্তা বরাবর একটি প্রতিবেদনও দিয়েছেন বলে জানান। এভাবে নদীর চর দখল হওয়ায় বর্তমানে নদীর বুকে কোন পানি নেই। যারফলে নদীপাড়ের কৃষকরা চরম হতাশায় পড়তে হয়েছেন। নদীপাড়ে দেখা যায়নি শীতকালিন সবজি ও বোরো চাষের কোন আমেজ।
এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দর আলীকে কাজ বন্দ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরও যদি কাজ চালিয়ে যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।