রায়েরবাগে ডাক্তার দম্পতিসহ ৪ জনের দণ্ড

fake doctorসুরমা টাইমস ডেস্কঃ রাজধানীর কদমতলী থানার রায়েরবাগের সালেমা হাসপাতাল এন্ড ল্যাব নামে একটি অবৈধ হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ভুয়া ডাক্তার দম্পতিসহ চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- ও অর্থদণ্ড করেছে র‌্যাব-১০ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে এ অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএইচ এম আনোয়ার পাশা। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- এসএম রবিউল আউয়াল (৪৩) ও তার স্ত্রী মোসা. মমতাজ বেগম (৩৬), সোনিয়া আক্তার (২২) এবং লুৎফুন নাহার (২৮)।
র‌্যাব জানায়, দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর কদমতলী থানার ১৭০ নম্বর রায়েরবাগের সালেমা হাসপাতাল এ্যান্ড ল্যাবে অভিযান চালায় র‌্যাবের একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানের সময় প্রতিষ্ঠানটির কোনো লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির মালিক এসএম রবিউল আউয়াল ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম ডাক্তার সেজে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। এখানকার সব নার্স ও টেকনিশিয়ান ভুয়া পরীক্ষার রিপোর্টে ডাক্তারের সিল মেরে নিজেরাই স্বাক্ষর করছিল। অভিযানের সময় দেখা গেছে, ভুয়া ডাক্তার রবিউল তার চেম্বারে সিজারের রোগী হোসনেয়ারার পেটে ড্রেসিং করছিল। হোসনেয়ারার স্বামী খোরশেদ আলম জানান, গত ৬ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে সিজার হয় তার স্ত্রীর। আজ তিনি সেলাই কাটতে এসেছেন। রবিউল এ সময় ওই রোগীর চিকিৎসা করছিলেন। বর্তমানে হোসনেয়ারার পেটে ইনফেকশন হয়েছে। তিনি আরও জানান, তারা মাতোয়াইল শিশু হাসপাতালে চিকিৎসার উদ্দেশে এসেছিলেন। সেখান থেকে দালালরা তাকে এই ভুয়া হাসপাতালে নিয়ে আসে। পারভেজ হোসেন দিপু নামে এক রোগী হাতে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসলে, রবিউল এবং তার সঙ্গীরা তার চিকিৎসা করে হাতে ব্যান্ডেজ ও প্লাস্টার করে দেয়।
অভিযানের সময় আকলিমা বেগম, নূর নাহার রুপা, জেসমিন আক্তার ও ফাতেমা বেগমসহ আরও কয়েকজন রোগী পাওয়া যায়। যাদের অধিকাংশই সন্তান সম্ভবা। র‌্যাব সূত্র আরও জানায়, হাসপাতালটিতে ২৭টি বেড রয়েছে। আইন অনুযায়ী প্রতিটি শিফটে তিনজন ডাক্তার এবং ছয়জন নার্স সার্বক্ষনিক থাকা বাধ্যতামূলক হলেও রবিউল ও তার স্ত্রী মমতাজ সার্বক্ষনিক ডাক্তারের কাজ করেন। আর কোনো ডাক্তার নেই। ডাক্তারি বিষয়ে তাদের কোনো সনদও নেই। মমতাজ অন্য একটি হাসপাতালে নার্সের কাজ শিখে এখানে ডাক্তারি করছেন। এ সময় সোনিয়া আক্তার নামে একজন নার্স কাজ করেছিল, যার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। এছাড়া লুৎফুন নাহার তাদের সহযোগী হিসেবে প্রতারণা করেছিল। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত এসএম রবিউল আউয়ালকে দুই বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন।
এছাড়া মমতাজ বেগমকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড, সোনিয়া আক্তারকে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড এবং লুৎফুন নাহারকে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাব-১০ এর পরিচালনা মেজর তৌফিকুল বারী জানান, এই এলাকায় যেসব অবৈধ হাসপাতাল রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ডাক্তার স্বপন কুমার তপাদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।