জাফলংয়ে ক্রাশার মেশিন উচ্ছেদ অভিযানে ইউএনও’র ওপর হামলা

গাড়ি ভাঙচুর ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত ২০

Jaflongগোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে গড়ে উঠা ষ্টোন ক্রাশার মেশিন অপসারণে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান চলাকালিন সময়ে রাস্তার দুই পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠা অর্ধশতাধিক ক্রাশার মেশিন অপসারণ করা হয়েছে। সহকারী ভূমি কর্মকর্তা এসএম ফেরদৌস ইসলামের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা, পুলিশ ও বিজিবি’র অর্ধশতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ক্রাশার মেশিন অপসারন করার সময় স্থানীয় মিল মালিক ও শ্রমিকেরা অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যদের উপড় হামলা চালায়।এসময় ইউএনও এবং বিজিবি’র ব্যবহৃত দুটি গাড়ি ও পুলিশের একটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। হামলায় উপজেলা ভূমি সহকারি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট, পুলিশ সদস্য এবং সাংবাদিক সহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনা স্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানাযায়, গতকাল শনিবার সকালে জাফলং এলাকায় পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে গড়ে উঠা ষ্টোন ক্রাশার মেশিন অপসারনের জন্য উপজেলা সহকারি ভূমি কর্মকর্তা এস এম ফেরদৌস ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনাকারী দল উপজেলার নলজুরী ও গুচ্ছগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক ক্রাশার মেশিন অপসারন করেন। একপর্যায়ে অপসারন করার অভিযান অব্যাহত থাকলে স্থানীয় মিল মালিকরা শ্রমিকদের উসকে অভিযান পরিচালনাকারি দলের সদস্যদের উপড় হামলা চালায়। হামলায় অভিযানের নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি ভূমি কর্মকর্তা এসএম ফেরদৌস ইসলাম, থানার এএসআই বিনয় চক্রবর্তী, Jaflongমাই টিভির গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি হুমায়ুন আহমেদসহ অন্তত ২০জন আহত হন। এসময় গোয়াইনঘাটের ইউএনও ও বিজিবি’র ব্যবহৃত দুটি গাড়ি এবং পুলিশের একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে তারা। হামলঅকারীদের ধাওয়া খেয়ে প্রাণ বাচাতে অভিযান পরিচালনাকারি দলের ৩ জন সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক মেহেদী দৌড়ে ভারত সীমান্তের অভ্যান্তরে প্রবেশ করলে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা তাদেরকে আটক করেন। একপর্যায়ে বিজিবি’র সদস্যরা ভারতীয় বিএসএফ’র সাথে কথা বলে ২ ঘন্টা পর আটককৃতদের ফেরত আনতে সক্ষম হয়।
অন্যদিকে ক্রাশার মেশিন অপসারনের প্রতিবাদে স্থানীয় শ্রমিকরা সিলেট তামাবিল মহাসড়কের মামার বাজার পয়েন্ট ও গুচ্ছগ্রাম এলাকায় প্রায় ৩ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও জাফলং ক্রাশার মিল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলু বখত ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ কারীদের সাথে আলোচনা করলে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল হাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এব্যাপারে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম জানান, জাফলংয়ে পরিবেশের ছাড়পত্র বিহীন অবৈধভাবে গড়ে উঠা প্রায় অর্ধশতাধিক পাথর ভাঙ্গার ক্রাশার মেশিন অপসারন করা হয়েছে। ইতিপুর্বে অবৈধভাবে স্থাপিত ক্রাশার মেশিন নিজ নিজ উদ্যোগে অপসারনের জন্য স্থানীয় ক্রাশার মিল মালিকদের সাথে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা একাধিকবার বৈঠক করেছেন। তাতেও কোন সুরাহা না হওয়ায় এই অপসারন অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অপসারন চলাকালীন সময়ে একটি মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যদের উপড় হামলা চালায় এবং দুটি গাড়ি ও একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। তিনি আরো বলেন বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা ক্রাশার মেশিন নিজ উদ্যোগে সরিয়ে না নিলে অবৈধ ক্রাশার মেশিন অপসারনে আরো কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল হাই বলেন ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যদের উপড় হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।