জকিগঞ্জ মুক্তদিবস পালন

zakigonj 21.11.14জকিগঞ্জ প্রতিনিধি: মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, মুক্ত দিবসের র‌্যালি, আলোচনাসভা, মু্িক্তযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সমাবেশসহ নানা আয়োজনে গতকাল ২১ নভেম্বর জকিগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে। মুক্ত দিবসের উপলক্ষে বিকেল ৪টায় জকিগঞ্জ এমএ হক চত্তরে সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখের পৌর মেয়র আব্দুল মালেক ফারুক, সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আকরাম আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খলিল উদ্দিন, মোস্তাকিম হায়দর, আব্দুল মোতালেব, উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মালেক মালই, এমএজি বাবর, আব্দুল আহাদ, সংগঠক মোসলেহ উদ্দিন সুহেল, সাংবাদিক আল মামুন, শ্রীকান্ত পাল, আল হাছিব তাপাদার, মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন, নিপেন্দ্র বিশ্বাস, সোনা মিয়া, জহির উদ্দিন, সামছুল হক, হাসিম আলী, উপজেলা ছাত্রলীগ যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ আহমদ প্রমূখ। জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করেন পৌর মেয়র আব্দুল মালেক ফারুক। সমাবেশে বক্তারা জকিগঞ্জকে বাংলার প্রথম মুক্তাঞ্চল ঘোষনার জোরদাবী জানিয়ে বলেন, ২১ নভেম্বর জকিগঞ্জ তথা দেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। এই দিনেই তিনদিকে ভারতবেষ্টিত জকিগঞ্জকে মুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয় । একাত্তরের ২০ নভেম্বর রাতে যৌথ বাহিনীর এক সাঁড়াশি অভিযানের ফলে ২১ নভেম্বর ভোরে মুক্ত হয় জকিগঞ্জ। মুক্তিযুদ্ধে জকিগঞ্জ ছিল ৪ নং সেক্টরের অন্তর্ভূক্ত। অধিনায়ক ছিলেন মেজর চিত্ত রঞ্জন দত্ত। সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত দেওয়ান ফরিদ গাজী ছিলেন এই সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা। ৬টি সাব সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন মাহবুব রব সাদী, লে. জহির উদ্দিন ও ক্যাপ্টেন এম.এ.রব। এমপি দেওয়ান ফরিদ গাজী, এমএলএ আবদুল লতিফ, এমএলএ আব্দুর রহিম, সেক্টর কমান্ডার চিত্ত রঞ্জন দত্ত, মিত্র বাহিনীর দায়িত্ব প্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার ওয়াটকে, কর্নেল বাগচিসহ মাছিমপুর ক্যান্টলম্যান্টে জকিগঞ্জকে স্বাধীন করার এক পরিকল্পনা গ্রহন করেন। ঐ পরিকল্পনা ছিল কীভাবে কুশিয়ারার ওপারে ভারতের করিমগঞ্জের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে জকিগঞ্জ দখল করা যায় এবং এ পরিকল্পনা মতই জকিগঞ্জ মুক্ত হয়। মুক্তাঞ্চলের প্রথম আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ড বিহার প্রদেশের চাকুলিয়ায় বিশেষ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত জালালাবাদ গ্যাসের পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জকে মুক্ত করার পরিকল্পনা অনুসারে ২০ নভেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী ৩টি দলে বিভক্ত হয়ে জকিগঞ্জের দিকে অগ্রসর হয়। জকিগঞ্জ মুক্ত করতে পাক সেনাদের বুলেটে শহীদ হন ভারতীয় বাহিনীর মেজর চমন লাল ও তার দুই সহযোগী। এ সময় বেশ কয়েকজন পাক সেনাকে আটক করা হয়। একুশে নভেম্বর ভোরে জকিগঞ্জের মাটিতেই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়িয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধারা।
সমাবেশে বক্তারা সরকারের প্রতি পাচটি দাবী জানিয়েছেন, জকিগঞ্জকে প্রথম মুক্তাঞ্চলের সরকারী স্বীকৃতি, গেজেট আকারে মানবতাবিরোধীদের তালিকা প্রকাশ করা, জকিগঞ্জ সরকারী কলেজকে ডিগ্রী করণ, জকিগঞ্জে গ্যাস সংযোগ দেওয়া।