শাবি: ১৭ ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেপ্তার, মামলায় আসামি ২৫০
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৭ ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসাথে গুলিভর্তি রিভলবার ও ১৯টি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোরে তাদের আটক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকতার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৫০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে জালালাবাদ থানার এসআই শফিক বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রকাশ্যে ক্যাম্পাস ও হলের দখল নিতে গেলে ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিবন চক্রবর্তী ও সহসভাপতি অঞ্জন রায় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় সুমন নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়। সে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শেষ বর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিমাদ্রি শেখর রায় সহ ১২ জন আহত হয়। সংঘর্ষের পর এক জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠকে বৃহস্পতিবার বিকাল চারটার মধ্যে ছাত্রদের এবং শুক্রবার সকাল নয়টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গেছে, সংঘর্ষে নিহত সুমন অঞ্জন-উত্তম গ্রুপের হয়ে শাবিতে গিয়েছিল। এছাড়া সুমনের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সুমনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসারত অবস্থায় সে মারা যায়।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ওমর ফারুক বলেন,”গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সুমনকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পথেই মারা যায়।”
বৃহস্পতিবার সকালে দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢোকার পরও সংঘর্ষ চলে। পুলিশের সামনেই ধারালো অস্ত্র হাতে ছাত্রলীগের বিবদমান পক্ষদুটির ক্যাডাররা একে অপরকে ধাওয়া করে।
বলতে গেলে পুলিশ এ সময় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। এ সময় অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয় এবং তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাসে শুরু হয় ছুটাছুটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিবন চক্রবর্তীর সমর্থকরা। এ সময় ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণে থাকা সহসভাপতি অঞ্জন রায় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য উত্তম কুমার দাশের সমর্থকরা তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, গেল বছর ৮ মে সঞ্জিবন চক্রবর্তীকে সভাপতি ও ইমরান খানকে সাধারণ সম্পাদক করে শাবি শাখা ছাত্রলীগ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কমিটি ঘোষণা করা হলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সঞ্জিবন চক্রবর্তী ও তার সমর্থকরা এতদিন ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেনি। ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণে ছিল সহসভাপতি অঞ্জন রায় ও উত্তম কুমার দাশ ও তাদের সমর্থকদের।