তারেক রহমানকে ২০০৭ সালে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিলো
তারেক রহমানের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আবার স্বাধীন হবে : যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি আয়োজিত জন্ম দিন পালন অনুষ্ঠানে আব্দুল্লাহ আল নোমান
নিউইয়র্ক থেকে এনা: বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫০তম জন্ম দিন উৎসবমুখর ও বর্ণঢ়্য আয়োজনে পালন করেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠন। তারেক রহমানের ৫০তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি গত ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় উডসাইডের গুলশান টেরেসে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আব্দুল্লা আল নোমান বলেছেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বেই শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে এবং বাংলাদেশ আবার স্বাধীন হবে, গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। শেখ হাসিনা বাঘের পিঠে চড়েছে। সেই বাঘের পিঠ থেকে তাকে পড়তে হবে এবং প্রথম আক্রমণ তাকে বাঘই করবে। অন্যদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সহকারি সচিব বলেছেন ২০০৭ সালে তারেক রহমানকে কারাগারে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের জন্ম দিনে রাত ১২ টা ১ মিনিটে ৪৯ পাউন্ডের কেক কাটা হয়। দ্বিতীয় পর্বে তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবনীর উপর নির্মিত ৪৫ মিনিটের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং রাজনৈতিক দলীল উপস্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট এবং পরিচালনা করেন টেক্সাস বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ বশির ও সোলায়মান শেরনিয়াবাদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, বিএনপি নেতা বাবর উদ্দিন, তারেক আন্তর্জাতিক পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বাদল, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ম ই শাহীন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সভাপতি আবু তাহের, এটর্নী প্যারি ডি সিলভা, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সভাপতি আতাউর রহমান আতা, যুব দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিন, জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি রাফেল তালুকদার, সিটি বিএনপির সভাপতি মাহফুজুল মাওলা নান্নু, ব্রুকলীন বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন, বিএনপি নেতা জাকির হাওলাদার, শাহ আলম, ফিরোজ আলম, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মোল্লা, বিএনপি নেতা আবুল বাশার, ইলিনয় স্টেট বিএনপির সভাপতি রহমত উল্যাহ, কাজী আজহারুল হক মিলন, ড. শওকত আলী, ড. এস আই শেলি, সৈয়দ মাহমুদা শিরিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জনি, ছাত্রদল নেতা খলকু রহমান, ব্রঙ্কস বিএনপি নেতা কাওসার আহমেদ, মাইনুল হাসান মুহিত, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রহমান, সিটি বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন, ব্রুকলীন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, তারেক আন্তর্জাতিক পরিষদের সদস্য সচিব ভিপি জসিম, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা জাফর তালুকদার, কুইন্স বিএনপি নেতা হাসান মাহমুদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
আব্দুল্লাহ আল নোমান জন্মদিনের তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, প্রথম বাংলাদেশ গানটি গেয়ে গেয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। আর শেষ বাংলাদেশ গাইতে গাইতে চট্টগ্রামে জীবন দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি তখন যুদ্ধের মাঠে আমরা নিজ কানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছি। জিয়াই জীবন বাজি রেখে সেনা বাহিনীর লোক হয়েও প্রথম বিদ্রোহ করেছিলেন। জিয়া তার ঘোষণা দিয়েছিলেন হেড অব দা স্টেট হিসাবে। তার ঘোষণায় আমরা উদ্বূদ্ধ হয়েছিলাম। জিয়া যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন তা এ কে খন্দকারের বইতেই লেখা আছে। আওয়ামী লীগের তৎকালীর সাধারণ সম্পাদক তাজ উদ্দিন আহমেদ শেখ মুজিবকে ক্যাসেটের মাধ্যমে ন্বাধীনতা ঘোষণা দিতে বলেছিলেন। কিন্তু শেখ মুজিব তা দিতে আস্কৃতি জানান। তিনি আরো বলেছিলেন তুমি কী আমাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বানাবে চাও? আমি ক্যাসেটে ঘোষণা দিলে পাকিস্তানীরা ডকুমেন্ট পাবে। আমি এটা করতে চাই না। শেখ মুজিব আসলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে শেখ মুজিবের যে ভূমিকা ছিলো তা তিনি পালন করতে পারেননি। তিনি তারেক রহমান সম্পর্কে বলেন, তারেক রহমান পারিবারিক সূত্রে রাজনীতিতে আসেননি। তিনি তার যোগ্যতা এবং কর্মের মাধ্যমে এ পর্যায়ে এসেছেন। তারেক রহমান বুঝতে পেরেছিলেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ছাড়া দেশ এবং দল পরিচালনা করা যাবে না। আদর্শিক রাজনীতির জন্য তারেক রহমান সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করেছেন। আমরা যা বুঝতে পারিনি তিনি তা বুঝতে পেরেছেন। যে কারণে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিকে তৃণ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। কৃষকের জমির আইলে নিয়ে গিয়েছিলেন, শ্রমিকের বস্তিতে নিয়ে গিয়েছিলেন, জিয়া বিজ উৎপাদন করেছিলেন। বাংলাদেশে একটি কথা চালু ছিলো, মিডিয়ায় এসেছেন। বগুড়া মডেলের কথা আপনারা সবাই জানেন। এই মডেল চালু করেছিলেন আমার এবং আপনাদের নেতা তারেক রহমান। যে কারণেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিলো। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নতুন নয়। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো চালানো হয়েছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। আমরা যারা দায়িত্বে ছিলাম এবং দল প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালী ছিলো না বলেই আমরা তা প্রতিহত করতে পারিনি। তিনি আরো বলেন, আজকের স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরে তারেক রহমান ইতিহাসের কিছু সত্য কথা বলেছেন । এর আগে আমরা কেউ বলিনি। তিনি বলেছিলেন জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং জিয়াই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে বলেন, শেখ হাসিনা বাঘের পিঠে ছড়েছেন। বাঘের পিঠ থেকে তাকে নামতে হবে। অস্ত্র দিয়ে, গুলি করে এবং মানুষ হত্যা এবং গুম করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। সব সময়ই নিরস্ত্র মানুষ জয়লাভ করে। এবারো বাংলাদেশের মানুষ জয়লাভ করবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে। শেখ হাসিনাকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে। বাংলাদেশ আবার স্বাধীন হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে। গণতন্ত্র মুক্তি পাবে এবং শেখ হাসিনার বিদায় হবে। তিনি বলেন, আপনারা স্লোগান দেন এক জিয়া লোকান্তরে লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে, আমি আজকে স্লোগান দিচ্ছি এক তারেক প্রবাসে লক্ষ তারেক বাংলাদেশে।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সহকারী সচিব শামসুল আলম বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে আমি তারেক রহমানের অনুরোধে আসি। আজকে আপনারা তারুণ্যের প্রতীক এবং আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের জন্ম দিন পালন করছেন। এই সময়টি বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী সময়, ক্রান্তিকাল। তারেক রহমানের জন্ম দিন বিশেষ গুরুত্ব বহন করেন। আমি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের সাথে দীর্ঘ ১৭/১৮ বছর ধরে কাজ করছি। তিনি বলেন, আল্লাহ অশেষ রহমান যে বেগম খালেদা জিয়া এখনো বেঁচে আসেন। তাঁর উপরে যত নির্যাতন এবং জুলুম চালানো হয়েছে, বাংলাদেশে অন্য কোন নেতার উপর তা চালানো হয়নি। তাকে এক ঘরে করে রাখা হয়েছে, তার আদরের দুটো সন্তানকে তার কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছে, নাতনীদের কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছে। এত নির্যাতন, জুলুমের পরও তিনি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ দলকে পরিচালিত করছেন। তিনি আরো বলেন, কুথ্যাত শেখ হাসিনা ৫ জানুয়ারির ভোটার ও প্রার্থী বিহিনী নির্বাচন করে আজকে অবৈধভাবে ক্ষমতায়। শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম সেটা ফাঁস করে দিয়েছেন। নির্বাচনে পর তারেক রহমান ঢাকায় ম্যাসেজ পাঠিয়েছেন আন্দোলন চালিয়ে যাবার জন্য। বেগম খালেদা জিয়াও চেয়েছিলেন কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপ ও বন্ধুদের কারণে তা হয়নি। বেগম খালেদা জিয়া সেই ভুল বুঝতে পেরেছেন। এখন সময় এসেছে আন্দোলনের। তিনি আরো বলেন, অবৈধ শেখ হাসিনাকে নির্যাতনের জন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেয়া যেতে পারে। আজকে বাংলাদেশের যে বাকশালী সরকার ক্ষমতায় তাকে হটানোর জন্য তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা এবং ভারতের একমাত্র শত্রু হচ্ছে তারেক রহমান। তারা তারেক রহমানকে ভয় পায়। সে কারণে ২০০৭ সালে তারেক রহমানকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তাকে কারাগারে হত্যা করতে চেয়েছিলো কিন্তু আল্লাহ এবং মানুষের ভালবাসায় তিনি বেঁচে গেছেন। আজকে আমি বলতে পারি তারেক রহমানের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আবার স্বাধীন হবে। সেই দিন বেশি দূরে নয়। হয়ত আপনারা আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা শুনতে পারেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ’এ ম্যান ক্যান চেঞ্জ দা নেশন’ শীর্ষক তারেক রহমানের উপর ৪৫ মিনিটের প্রমাণ্য চিত্র প্রদর্শণ করা হয়। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা প্রথম এই ভিডিওটি দেখেছিলেন। তারপরেই দেখানো হচ্ছে আজ নিউইয়র্কে। এই ভিডিও চিত্রে তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবন এবং সংগ্রাম তুলে ধরা হয়। আশিক ইসলামের পরিচালনায় নির্মিত এই ভিডিও শুধুই একটি ভিডিও নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। তারেক রহমানকে নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ কী চিন্তা- ভাবনা করেন, তারেক রহমান কীভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজনীতি পরিবর্তন করেছেন তা উঠে এসেছে। সেই সাথে একটি নেশনকে কিভাবে উন্নতির দিকে নিয়ে পারেন সেই রূপরেখাও রয়েছে।
এই ভিডিও চিত্রের উপর আলোচনা করেন লংআইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শওকত আলী এবং ড. এস আই শেলি। ভিডিও চিত্রটি উদ্বোধন ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান।
অনুষ্ঠানের তৃতীয় এবং শেষ পর্বে তারেক রহমানের ৪৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৪৯ পাউন্ডের কেক কাটা হয়। এ সময়
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি বিটিভি জার্মান সরাসরি সম্প্রচার করে। অনুষ্ঠানের শুরু কোরআন তেলওয়াত করেন মাওলানা ওম ফারুক।
এনা পিক: তারেক রহমানের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আব্দুল্লাহ আল নোমান। ছবি- এনা।
এনা পিক-১ঃ তারেক রহমানের জন্মদিনে ৪৯ পাউন্ডের কেক কাটা হচ্ছে। ছবি- এনা।