একটি ব্রেকিং নিউজ : বিশ্বনাথে আতংক, তোলপাড়, উদ্ধেগ, নানা প্রশ্ন ?
বিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ “সিলেটের বিশ্বনাথে ৫টি অটোরিকশা ভাংচুর, আটক ১” শিরোনামে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারাদিন একটি বেসরকারী টেিিলভিশনে ‘ব্রেকিং নিউজ’ প্রচারিত হয়। এ সংবাদ প্রচারের পর প্রবাসী অধ্যূষিত বিশ্বনাথের সর্বত্র টক অব্য দ্য বিশ্বনাথে পরিণত হয়। দিনভর সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ জনমনে আতংকের সৃষ্ঠি হয়। হরতালের মাঝে উপজেলার সদরে আসা বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের মধ্যে উদ্ধেগ-উৎকন্ঠা দেখা দেয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভাংচুরের এ ব্রেকিং সংবাদ জানাতে গিয়ে পরিচিত, স্বজনদের সতর্কতার সাথে চলাচল করার পরামর্শ দিতে থাকেন অনেকে। এনিয়ে আরো আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মোবাইল ফোনের সুবাদে অনেকে প্রবাসে থাকা স্বজনদের কাছেও এ সংবাদ পৌছলে তারাও আতংকিত হয়ে উঠেন এবং নিরাপদে থাকতে পরিবার-স্বজনদের পরামর্শ দেন। উপজেলার সর্বত্র লোকজন ভয়ে বাসা-বাড়ি থেকে প্রয়োজন ছাড়া বেরুতে চায়নি।
হরতালে এমনিতেই বিশ্বনাথের সাধারণ জনগণ, ব্যবসায়ীরা আতংকিত থাকেন। তার ওপর আবার ৫টি অটোরিকশা ভাংচুরের সংবাদে জনসাধারণের ভয়-ভীতির মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ সচেতন মহলে বিগত দিনের হরতালের সময় সংঘাত-সংঘর্ষের ভয়াবহ চিত্র চোঁখে-মুখে ফুঁটে উঠে। অজানা আতংকে ভূগেন অনেকেই।
২০১২ সালের ভয়াবহ সেই ২৩ এপ্রিল ও ২০১৩ সালের ২০ মার্চের লোমহর্ষক ঘটনা মনে হলে আজোও বিশ্বনাথের মানুষ আঁতকে উঠে। ভীতিকর সেই পরিবেশের পুরনাবৃত্তি হচ্ছে কিনা এনিয়ে সকল মহলে ছিল উদ্ধেগ। হরতালে পুলিশ প্রশাসন বেশ তৎপর ছিল। কিন্তু ব্রেকিং সংবাদে নড়েচড়ে উঠে তারা। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় ব্যপক পুলিশী তৎপরতা। ছোটাছুটি করে ওখান থেকে এখানে। দিনভর চলে তাদের এ অবস্থা। স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অনেকেই ভাংচুরের খবর জানতে চান। কিন্তু খোঁজ নিয়ে এ সংবাদের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। কোথাও অটোরিকশা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। তবে উপজেলা সদর থেকে খাজাঞ্জি ইউনিয়ন জামায়াতরে সাধারণ সম্পাদক জসিমউদ্দিন কাওছার কে আটক করে থানা পুলিশ। দিনভর উক্ত ব্রেকিং নিউজের এমন গুজবে আতংকিত মানুষের মনে নানান প্রশ্নের জন্মদিয়েছে। বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলটির সংবাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে জনমনে সন্ধেহ আরো প্রকট হয়েছে। ইতিপূর্বে ঐ একই চ্যানেলটি এরকম একটি বিভ্রান্তিকর ব্রেকিং সংবাদ প্রচার করে বিশ্বনাথসহ দেশ-বিদেশে আলোচনা-সমালোচনা জন্ম দিয়েছিল। সেসময় তারা প্রচার করেছিল পুলিশের সাথে একটি রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষে আহত ৩০। কিন্তু এর কোন বাস্তবতা ছিল না। সচেতন মহল মনে করেন এমন বিভ্রান্তিকর, অসত্য সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকবেন এবং জনগণের ভয়, আতংক সৃষ্ঠি না করে সঠিক সংবাদ পরিবেশনে সচেষ্ঠ হবেন চ্যানেল কৃর্তপক্ষ।
এ ব্যাপারে অটোরিকশা চালক নূরুল ইসলাম বলেন, হরতালের জন্য গাড়ি বের করেননি রাস্তায়। তিনি বলেন, টিভিতে অটোরিকশা ভাংচুরের খরব প্রকাশ হওয়ায় ভয়ে গাড়ি বের করিনি।
থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. রফিকুল হোসেন বলেন, অসত্য সংবাদে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। সংবাদ দেখে তিনি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশী তৎপরতা আরো জোরদার করেন। তিনি বলেন, এভাবে চ্যানেলটি মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে আতংকের সৃষ্ঠি করে।