টেংরাটিলায় ফের গ্যাসের বুদবুদ : আতঙ্ক
ছাতক সংবাদদাতাঃ সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলাস্থ টেংরাটিলার পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ডে কয়েকদিন যাবৎ গ্যাস উদগীরণ চলছে। উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গ্যাসফিল্ডের আশপাশ এলাকাসহ টেংরাটিলা গ্রামের বিভিন্ন বসত বাড়ি, জমি, পুকুর, রাস্তা-ঘাট দিয়ে ফাটলের মাধ্যমে ব্যাপক হারে গ্যাস উদগীরিত থাকায় গ্রামের লোকজনসহ এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত শনিবার বিকেল হতে পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ডের আশপাশ এলাকায় গ্যাস উদগীরণের বুদবুদ শব্দ শোনা যায়। গ্যাসফিল্ডের নিরাপত্তাকর্মীরা নাইকো ও বাপেক্স এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেন।
টেংরাটিলা গ্রামের শের মাহমুদ জানান, শনিবার বিকেলে হঠাৎ গ্যাসফিল্ডে বিকট শব্দে ভূমিতে কিছুটা কম্পন শুরু হলে সর্বত্র আতঙ্কের পাশাপাশি গ্যাসফিল্ড সংলগ্ন এলাকায় অবিরাম গ্যাস উদগীরণ বের হতে থাকে। এছাড়া বিগত কয়েকদিন যাবৎ গ্যাস উদগীরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় টেংরাটিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৫সালে গ্যাস কুপে এভাবেই উদগীরণের মাধ্যমে বিষ্ফোরণ ঘটে। টেংরাটিলা গ্যাসকুপের তলদেশে গ্যাসের ব্যাপক সম্ভাবনাসহ ব্যাপক তৈল জাতীয় সম্পদ অকটেনের প্রচুর রিজার্ভ খনি রয়েছে। নাইকোর মামলা সংক্রান্ত জটিলতার দরুন অদ্যাবদি গ্যাসফিল্ডটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। নাইকো কর্তৃপক্ষের অভিজ্ঞ কোন কর্মকর্তা না থাকায় প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতিক জানান, টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ডের আশপাশে গ্যাস উদগীরণের মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তিনি গ্যাসফিল্ড এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের শান্ত ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, ২০০৫সালের জানুয়ারি ও জুন মাসে দু’দফা গ্যাস বিস্ফোরণের ফলে টেংরাটিলা এলাকায় মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছিল। এ সময় গ্যাসফিল্ডের প্রোডাকশনকূপের রিগ ভেঙ্গে বিকট শব্দে ভয়াবহ কম্পনসহ আগুনের লেলিহান শিখা অন্তত ৩শ’ ফুট উপরে উঠানামা করে। ফলে আশপাশ গ্রামের বাড়ী-ঘর, গাছপালা পুড়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়। দু’দফা বিস্ফোরণে গ্যাসফিল্ডের মাটির উপরে ৩বিসিক গ্যাস পুড়ে যাওয়া এবং ৫.৮৯ থেকে কমপক্ষে ৫২বিসিক গ্যাসের রিজার্ভ ধ্বংস হয়েছিল। নাইকো কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্থদের নামমাত্র ক্ষতিপুরণ দিয়ে সকল সরঞ্জমাদি এখান থেকে সরিয়ে নেয়।