নিজামীর মামলার রায় আজ

nijamiসুরমা টাইমস ডেস্কঃ একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর রায় ঘোষণার জন্য আজ বুধবার ট্রাইব্যুনালের কার্য তালিকায় রাখা হয়েছে।
চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এই ঘোষণা দেন। ট্রাইব্যুনাল-১এর অন্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর এটি হবে ট্রাইব্যুনাল থেকে প্রথম রায়। নিজামীর বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে গত ২৪ মার্চ মামলাটি যেকোনো দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখে ট্রাইব্যুনাল।
রায় ঘোষণার দিন ঠিক করার পরে প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, আসামি নিজামীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আনীত সব অভিযোগ সাক্ষ্য, তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে প্রসিকিউশন। রায়ে এ আসামির সর্বোচ্চ দণ্ড হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এ প্রসিকিউটর।
অন্য দিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম দাবি করেছেন নিজামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গত বছর ১৩ নভেম্বর নিজামীর বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে মামলাটি যেকোনো দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রেখেছিল ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের চাকরির বয়সসীমা পূর্ণ হওয়ায় তিনি গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর অবসর যান। ফলে চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য হয়।
ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান পদে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে ২৩ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
নতুন চেয়ারম্যান নিজামীর মামলায় নতুন করে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেয়। সে অনুযায়ী এ মামলায় পুনরায় যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
নিজামীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ১৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ২৮ মে তার বিচার শুরু হয়।
নিজামীর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে চারজন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দেয়। সাক্ষীদের জেরা করে প্রসিকিউশন। নিজামীর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ আগস্ট থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাক্ষী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও ইতিহাসবিদসহ মোট ২৬ সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেছেন। আসামিপক্ষ এসব সাক্ষীকে জেরা করেছে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের এক মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেফতার করা হলেও একই বছরের ২ আগস্ট এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের আদেশে তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, মতিউর রহমান নিজামীর মামলার এ রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে উভয় ট্রাইব্যুনাল থেকে ১০টি রায় ঘোষণা করা হবে।